<p>শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই দেশে বাড়তে শুরু করে রেমিট্যান্সপ্রবাহ। আগস্ট মাস থেকেই রেমিট্যান্স ছিল ঊর্ধ্বমুখী। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে। বিদায়ি বছরের শেষ মাসে ২৬৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এর পাশাপাশি বিদেশি ঋণের অর্থ ছাড়ের কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভ দুই হাজার ৬০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে।</p> <p>আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ ২ হাজার ১৫০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। পাশাপাশি মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশি দায়ের পরিমাণও কমে এসেছে।</p> <p>আগস্টে নতুন সরকার গঠনের পর প্রতি মাসেই ২০০ কোটি ডলারের বেশি প্রবাসী আয় এসেছে। তবে ডিসেম্বরে আসা ২৬৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় পুরনো সব রেকর্ড ভেঙেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯৯ কোটি ১০ লাখ ডলার। সে হিসাবে গত মাসে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩২.৫৪ শতাংশ। আর ২০২৩ সালের চেয়ে বিদায়ি বছরে ২৩ শতাংশ বেশি প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার পরিবর্তনের পর ব্যাংক থেকে যেনতেনভাবে ঋণ বিতরণ কমে এসেছে, এর ফলে অর্থপাচারও কমে গেছে। সে কারণে হুন্ডি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রবাসীরা দেশের সংকট মেটাতে আগের চেয়ে বেশি এগিয়ে আসছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও দেশের ব্যাংকগুলোর সমন্বিত উদ্যোগে রেকর্ড আয় এসেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে ডলার সংকট শিগগিরই কেটে যাবে।</p> <p>গত ৫ আগস্ট যখন সরকার পরিবর্তন হয়, তখন দেশের ব্যাংকগুলোর কাছে বিদেশি ব্যাংকগুলোর ৩৭০ কোটি ডলার পাওনা ছিল। এর ফলে অনেক ব্যাংক বিদেশিদের কাছে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়ে। একই সময়ে বিদেশি ঋণমান সংস্থাগুলো বাংলাদেশের রেটিং অবনমন করায় দেশের বাইরের ব্যাংকগুলো বিদেশি মুদ্রা ব্যবহারের সীমা কমিয়ে দেয়। জানা গেছে, গত পাঁচ মাসে প্রায় ৩৩০ কোটি ডলারের মেয়াদোত্তীর্ণ দায় শোধ করেছে দেশের ব্যাংকগুলো। এর মধ্যে ২৫০ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে সরকারি খাতের ব্যাংকগুলো।</p> <p>বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের গণ-আন্দোলনের পর প্রবাসীরা দেশের অর্থনৈতিক সংকট মেটাতে এগিয়ে আসেন। এ ছাড়া অর্থপাচার কমার কারণে হুন্ডিও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ব্যাংকগুলোও মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশি দায় সমন্বয়ের জন্য প্রবাসী আয় সংগ্রহে আগের চেয়ে বেশি নজর দিয়েছে। এর ফলে রেকর্ড প্রবাসী আয় এসেছে। এতে বকেয়া দায় যেমন কমে এসেছে, তেমনি রিজার্ভও বেড়েছে।’</p> <p> </p>