<p>বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছিল। টার্মিনাল দখল, চাঁদাবাজিসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই, যা তারা করেনি। আগামী দিনে দেশের পরিবহন সেক্টর হবে নৈরাজ্যমুক্ত। পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনকে সেই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।</p> <p>রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের উদ্যোগে অঞ্চল সভাপতি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কবির আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে পরিবহন সেক্টরের নেতারা বক্তব্য দেন।</p> <p>শামসুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত দেড় যুগে দেখেছি, সরকার পরিবহন সেক্টরের ওপর ভর করে দেশে অপরাজনীতির খেলায় মেতে উঠেছিল। নিরীহ পরিবহন শ্রমিকদের দিয়ে মানুষদের সীমাহীন কষ্ট দিয়েছে তারা। বিভিন্ন টার্মিনাল দখল করে তাদের মর্জিমতো পরিচালনা করেছে। কথায় কথায় বাস বন্ধ করে দিতো তারা। বিরোধী দলের সভা সমাবেশের আগে সারা দেশের পরিবহন বন্ধ করে দিয়ে জন দুর্ভোগ সৃষ্টি করতো তারা। গুটি কয়েক নেতা নিজেদের ফায়দা হাসিলের জন্য ৪০ লাখ শ্রমিককে জিম্মি করে রেখেছিল। অথচ করোনা মহামারির সময় এসব শ্রমিকদের পাশে দেখা যায়নি। করোনার সময় পরিবহন শ্রমিকরা অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করেছেন। কিন্তু এসব কথিত শ্রমিক নেতারা কোনো দিন শ্রমিকের খোঁজ নিতে যাননি। উল্টো সরকারের দেওয়া প্রণোদনা মেরে খেয়েছেন তারা।’</p> <p>তিনি বলেন, ‘শ্রম আইনে মালিক পক্ষ ও শ্রমিক পক্ষ কারা হবেন, তার সুস্পষ্ট সংজ্ঞা থাকলেও আমাদের দেশে পরিবহন মালিকরা শ্রমিক নেতা বনে যাচ্ছেন। এই ধারা বন্ধ করতে হবে। শ্রমিক নেতা হবেন শ্রমিকদের মধ্য থেকে। তারা পরিবহনের মালিক হবেন না। পরিবহন মালিকরা মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠন দুটোই নিয়ন্ত্রণ করতে চান। এর মাধ্যমে তারা মূলত নিজেদের ব্যবসার ফায়দা তুলতে চান। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, পরিবহন শ্রমিক সেক্টর শ্রমিকদের হাতে থাকবে। শ্রমিকরা আর নষ্ট রাজনীতির স্বার্থ উদ্ধারে ব্যবহার হবে না। শ্রমিকরা তাদের ও দেশের স্বার্থ আপোষহীন ভূমিকা রাখবে। কারো রক্তচক্ষুকে শ্রমিকরা আর ভয় করবে না।’</p> <p>দেশের কোনো টার্মিনালে দখলদার ও চাঁদাবাজদের স্থান আর হবে না ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজ ও দখলদার মুক্ত টার্মিনাল গঠনের জন্য শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। গুটিকয়েক দখলদার ও চাঁদাবাজদের জন্য দুর্নাম হয় ৪০ লাখ শ্রমিকের। শ্রমিকরা দিনরাত পরিশ্রম করে দুর্নামের জন্য নয়। আগামী দিনে যারা টার্মিনাল দখল ও চাঁদাবাজি করতে আসবে তাদের রাজনৈতিক পরিচয় দেখা হবে না। সরাসরি আইনের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’  </p> <p>শ্রমিকদের নানা সমস্যা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সমাধানের দাবি জানিয়ে শামসুল ইসলাম বলেন, ‘শ্রমিকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে বিআরটি যে টালবাহানা করে তা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। শ্রমিকদের ওপর ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। মালিকদের অবশ্যই প্রতিটি শ্রমিককে নিয়োগপত্র প্রদান করতে হবে। সর্বোপরি পরিবহন শ্রমিকদের মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে তারা দেশের অগ্রগতির অন্যতম চালিকাশক্তি।’</p>