৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের দ্বিতীয় দিন আজ। রবিবার আখেরি মোনাজাত। এ পর্যন্ত ৪৯ দেশের ১৪৪৯ জন বিদেশি মেহমান এসেছেন। আজ বাদ আসর অনুষ্ঠিত হবে যৌতুকবিহীন বিয়ে।
ইজতেমায় ৪৯ দেশের ১৪৪৯ বিদেশি মেহমান, যৌতুকবিহীন বিয়ে আজ
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর

বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক নিজামুদ্দিন অনুসারী তাবলীগ জামাত বাংলাদেশের মিডিয়া সমন্বয়কারী মোহাম্মদ সায়েম কালের কণ্ঠকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টা পর্যন্ত মোট ৪৯ দেশের ১৪৪৯ জন বিদেশি মেহমানের নাম এন্ট্রি হয়েছে টঙ্গীর ময়দানে বিদেশি কামরার আমানতে। বিদেশি মেহমান ইজতেমায় শরিক হতে ময়দানের উদ্দেশ্যে আসা চলমান আছে। যেসকল দেশ থেকে মুসল্লিরা এসেছেন তার মধ্যে আরব ৮৯ জন, পশ্চিমবঙ্গ ২৬৪ জন, উর্দু ৪২৬ জন, ইংলিশ ৫১৭ জন, ছাত্র ১১২ জন, প্রবাসী ৪১ জন।
এদিকে বিশ্ব ইজতেমায় বিদেশি মেহমানদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ইজতেমা প্রশাসন। বিদেশি মেহমানদের খিত্তাকে ঘিরে বিশেষ নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, বিদেশি মেহমানদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বয়ান করছেন যারা : আজ শনিবার বাদ ফজর বয়ান করবেন মাওলানা ইলিয়াস বিন সাদ (দিল্লি নিজামউদ্দিন), তরজমা-মাওলানা ওসামা ইসলাম। সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে তালিমের মওজু (ফজিলত ও আদব)-মুফতি ইয়াকুব (নিজামুদ্দিন)।
উল্লেখ্য, ৩১ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি শুরায়ি নেজামের (জুবায়েরপন্থী) ইজতেমা সম্পন্ন হয়। এখন বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে মাওলানা সা’দ আহমদ কান্ধলভী অনুসারী মুসল্লিরা অংশ নিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার বাদ আসর প্রাথমিকভাবে ইজতেমা শুরু হলেও শুক্রবার বাদ ফজর আম বয়ানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়। ১৬ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দ্বিতীয় পর্ব তথা বিশ্ব ইজতেমার ৫৮তম আসর।
সম্পর্কিত খবর

ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ঢল
বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার

ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। মঙ্গলবার ঈদের দ্বিতীয় দিন সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট, কলাতলী পয়েন্টসহ আশপাশের পর্যটন স্পটগুলোতে লোকে-লোকারণ্য হয়ে ওঠে।
পর্যটকের কেউ কেউ সাগরের ঢেউয়ে শরীর ভিজিয়ে টিউব নিয়ে সাঁতার কেটে উপভোগ করছেন স্বচ্ছ সাগরের জলরাশি। আবার অনেকেই জেড স্কিতে চড়ে ঘুরে আসছেন ঢেউয়ের তালে তালে।
ঢাকা থেকে আগত পর্যটক সৈয়দ হোসেন বলেন, ‘সারা বছরই কোন না কোন কাজে ব্যস্ত থাকি তাই ঈদের টানা ছুটিতে পরিবার নিয়ে কক্সবাজারে এসেছি। অনেক ভালো লাগছে।
সমুদ্র পাড়ে ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে জলকেলিতে মেতে ছিলেন ফরিদপুর থেকে আগত পর্যটক প্রিন্স। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার এসে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মন একেবারে জুড়িয়ে যায়, তাই প্রতি বছর অন্তত একবার হলেও এখন আসার চেষ্টা করি ‘
গাজীপুর থেকে থেকে এসেছেন মোহাম্মদ কবির। তিনি বলেন, ‘ছুটি কাটাতে পরিবার নিয়ে কক্সবাজারে আসছি। সাগরের গর্জন শুনে আর সাগরের নীল জলরাশিরে পা ভেজাতে পেরে আমরা উচ্ছ্বসিত।
কক্সবাজার আবাসিক হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘আজ ঈদের পরের দিন সকাল থেকে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছে। এই মুহূর্তে তারকা মানের হোটেলগুলো প্রায় বুকিং রয়েছে। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করে হোটেল ভাড়া বেশি নিচ্ছে।’
কক্সবাজার বেড়াতে আসা পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ সমুদ্র গোসল। আর তাদের এইসমুদ্র গোসল নিরাপদ করতে কাজ করছে সী-সেইফ লাইফ গার্ড।
টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মহমুদ বলেন, ‘কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তায় টুরিস্ট পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। পর্যটকদের সুবিধার জন্য সৈকতের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট গুলোতে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া জেলা পুলিশের সহযোগিতায় পর্যটন এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে।’ পর্যটকেরা কক্সবাজার ভ্রমণ শেষে নিরাপদে বাড়িতে ফিরতে পারেন সে জন্য যা যা করার প্রয়োজন সবকিছু করতে টুরিস্ট পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে বলে তিনি জানান।

মা-ভাই-বোনের অস্ত্রের আঘাতে প্রকৌশলী খুন
রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের রাউজানে মা, ভাই ও বোনের অস্ত্রের আঘাতে নুরুল আলম বকুল (৪১) নামের এক প্রকৌশলী নিহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বিকেল ৩টার সময় রাউজান উপজেলার ১ নং হলদিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডস্থ তিতা গাজীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নুরুল অভিযুক্ত হত্যাকারী শহিদা বেগমের ছেলে। তার মা শহিদা বেগমের দুই ঘরের সন্তান রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রকৌশলী নুরুল আলম বকুল গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে স্ত্রী ও সন্তানদের শহরে রেখে নিজ বাড়িতে আসে। ঈদের পরের দিন দুপুরে মা শহিদা বেগম, সৎভাই দিদার আলম, নাজিম উদ্দিন, মুন্নি আকতারের সঙ্গে জায়গাজমি ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ হয়। এক পর্যায়ে তারা বকুলের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা ও ছোট ভাই রাজু আহমেদ প্রথমে রাউজান উপজেলা হাসপাতাল পরে চমেক হাসপতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূইয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, সৎভাইয়ের ছুরিকাঘাতে বড় ভাই নিহত হয়েছেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

‘আব্বা তো আর আইতো না, এর লাইগ্যা খালি মোবাইলো ছবি দেহি’
আলম ফরাজী, ময়মনসিংহ

‘আম্মা আর বড় আব্বা (চাচা) খালি কয় আব্বা আসমানো গেছে, আইয়া পড়বো। অহন তো ঈদো গেছেগা, কই আইলো না তো। ঈদের আগে বেহেই (সবাই) আইবো কইছিন। বড় আব্বা নতুন জামা আনলেও আমার মন খারাপ।
পাঁচ বছরের মেয়ে জান্নাতুল জানে না তার বাবা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে হুমায়ুনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, জান্নাতুল হাতে মোবাইল। বসে বসে নিজের বাবার ছবি দেখছে সে।
গত বছরের ২০ জুলাই গাজীপুরের সাইনবোর্ড বাজারে অবস্থিত বড় ভাইয়ের দোকানের ভেতরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন হুমায়ুন।
বাড়ির বাইরে বসে শোনা যাচ্ছিল ভেতরে কারো আহাজারি। পরে জানা গেল, ঘরের ভেতরে বসে কাঁদছেন শহীদ হুমায়ুনের মা ফরিদা খাতুন। গতকাল ঈদের দিন এই আহাজারি আরো কয়েক গুণ বেশি ছিল বলে জানিয়েছেন হুমায়ুনের স্ত্রী আয়েশা বেগম।
ফরিদা খাতুনের একটাই দাবি, তার সন্তান হত্যার বিচার।
স্ত্রী আয়েশা জানান, প্রতি ঈদেই স্বামী তাকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে ঘুরতে যেতেন। দূরে কোথাও গিয়ে ছবি তুলতেন। এই ছবি নিজেদের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করতেন। এসব এখন শুধুই স্মৃতি। এখন আগের ছবি তার সম্বল। অবুঝ মেয়ের সামনে কাঁদতেও পারেন না আয়েশা।
শহীদ হুমায়ুনের বড় ভাই হযরত আলী জানান, গত বছরের ২০ জুলাই বিকেলে ভ্যানগাড়িতে করে পানের বস্তা আসে হুমায়ুনের দোকানে। পানের বস্তা দোকানে ঢুকিয়ে দোকান বন্ধ করেন হুমায়ুন। এ সময় ভ্যানচালক গুলিবিদ্ধ হয়ে দোকানের সামনে লুটিয়ে পড়ে বাঁচও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকেন। হুমায়ুন ভ্যানচালককে উদ্ধার করে তার (হযরত আলী) দোকানে ঢুকিয়ে ভেতর থেকে সাটার লাগিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর পুলিশ বাইরে থেকে সাটার খুলে ভেতরে অবস্থানরত দোকান কর্মচারীদের লক্ষ্য করে লাঠিচার্জ ও গুলি করে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান হুমায়ুন।

অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নৈশ প্রহরীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এক গৃহবধূকে (৩০) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে হাকিম (২৫) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকালে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে কটিয়াদী মডেল থানায় ধর্ষণের অভিযোগ এনে একটি মামলা করেছেন। এর আগে সোমবার ঈদের দিন রাতে কটিয়াদী উপজেলার টান চারিয়া গ্রামে ভুক্তভোগীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত যুবক হাকিম (২৫) কটিয়াদী উপজেলার টান চারিয়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে।
হাবিবুল্লাহ খান বলেন, ‘ঈদের দিন রাতে কটিয়াদী পৌরসভার বোয়ালিয়া বাজারের পাশে টান চারিয়া এলাকায় ঘরের জানালা দিয়ে প্রবেশ করে ওই বাজারের নৈশ প্রহরীর স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেছেন হাকিম মিয়া নামের এক যুবক। এমন খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, স্বামী রাতে বোয়ালিয়া বাজারে কর্মস্থলে চলে যাওয়ার পর ছোট সন্তানকে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়েছিলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘আজ ভিকটিম নিজেই হাকিম মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ পেয়ে এ বিষয়ে মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তকে ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে।