<p>ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর আম্বেদকর-মন্তব্য ঘিরে দেশটির সরকার ও বিরোধীপক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি চলছে। এর মাঝেই সংসদে ধ্বস্তাধস্তিতে আহত হয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) দুই সংসদ সদস্য। এ ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধির দিকে। বিজেপির অভিযোগ রাহুল গান্ধীর আঘাতে তাদের এমপিরা আহত হয়েছে। </p> <p>বৃহস্পতিবার দুই পক্ষের ধস্তাধস্তিতে বিজেপির সংসদ সদস্য প্রতাপচন্দ্র ষড়ঙ্গী ও মুকেশ রাজপুত আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিজেপি সরকারের সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরণ রিজিজু বলেছেন, ‌‘কীভাবে তিনি (রাহুল) সংসদে শক্তি প্রয়োগ করতে পারেন। কোন আইন তাকে এমপিদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ক্ষমতা দিয়েছে।’</p> <p>জাপানিজ মার্শাল আর্টে ব্ল্যাক বেল্টধারী রাহুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা কিরণ ‍রিজিজু বলেছেন, ‘এমপিদের মারার জন্যই আপনি কারাতে কুং ফু শিখেছেন?’</p> <p>সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ভারতীয় সংসদের বাইরে বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সারাঙ্গী মাথায় আঘাত পেয়ে কিছুক্ষণ বসে থাকেন। এসময় রাহুল গান্ধি তার কাছে গিয়ে শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিজেপি সাংসদরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান।</p> <p>তখন বিজেপি নেতা নিশিকান্ত দুবে রাহুলকে উদ্দেশ করে বলেন– ‘রাহুল, আপনার কি লজ্জা করে না? আপনি এখানে গুন্ডামি করছেন! একজন বৃদ্ধ লোককে (প্রতাপ সারাঙ্গী) ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলেন!</p> <p>ঘটনার পর রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছেন,  ‘আমি ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। তারা আমাকে উল্টো (বিজেপির এমপি) ধাক্কা ও হুমকি দেয়।’</p> <p>গত মঙ্গলবার রাজ্যসভায় সংবিধানের ৭৫ বছর নিয়ে বিতর্কের শেষে জবাবি বক্তৃতায় শাহ বলেন, ‘এখন একটা ফ্যাশন হয়েছে, আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর...। এত বার ভগবানের নাম নিলে সাত জন্ম পর্যন্ত স্বর্গ লাভ হত।’</p> <p>আম্বেদকরকে নিয়ে অমিত শাহের মন্তব্যের প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবারও উত্তাল সংসদ ছিল। অধিবেশন মুলতুবি করে দিতে বাধ্য হন স্পিকার। এ সময় সংসদের প্রবেশদ্বারে সাংসদদের ধাক্কাধাক্কির অভিযোগ ওঠে। গত বুধবার থেকেই অমিত শাহর বিরুদ্ধে আম্বেদকর-অবমাননার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে কংগ্রেসসহ বিরোধীরা। </p> <p>এই ঘটনার পর কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধির বিরুদ্ধে এজাহার (এফআইআর) করেছে বিজেপি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, পার্লামেন্ট স্ট্রিট পুলিশ স্টেশনে গিয়ে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর, বাঁশুরি স্বরাজ।</p> <p>প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালে ওড়িশায় অস্ট্রেলীয় মিশনারি গ্রাহাম স্টুয়ার্ট স্টেইনস ও তার দুই শিশুপুত্রকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল বজরং দলের। সেই সময়ে বজরং দলের রাজ্য সভাপতি ছিলেন ষড়ঙ্গী। তার বিরুদ্ধেও খুনের মামলা রুজু হয়। কিন্তু মূল অভিযুক্ত দারা সিংহের যাবজ্জীবন জেল হলেও বিচারে রেহাই পেয়ে যান ষড়ঙ্গী।</p> <p>সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস</p>