বিমান দুর্ঘটনা কি এখন বেশি ঘটছে

বিবিসি ভেরিফাই
বিবিসি ভেরিফাই
শেয়ার
বিমান দুর্ঘটনা কি এখন বেশি ঘটছে
গত ২৫ ডিসেম্বর কাজাখ শহর আকতাউয়ের কাছে আজারবাইজান এয়ারলাইনসের একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর জরুরি বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন। ছবি : এএফপি

সম্প্রতি কয়েকটি হাই-প্রফাইল দুর্ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, বিমান দুর্ঘটনা নাকি বেড়ে চলেছে। অনলাইনে ভয়াবহ কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে একের পর এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা ও সংকটময় পরিস্থিতি দেখা গেছে। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহনমন্ত্রী শন ডাফি সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ ধরনের শঙ্কা কমানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক বিমান দুর্ঘটনাগুলো ছিল ‘একদমই ব্যতিক্রমধর্মী’।

ডাফির এই মন্তব্য আসে কয়েকটি গুরুতর দুর্ঘটনার পর, যার মধ্যে একটি ছিল জানুয়ারিতে ওয়াশিংটন ডিসিতে একটি বাণিজ্যিক বিমান ও একটি সামরিক হেলিকপ্টারের মধ্যকার আকাশে সংঘর্ষ, যেখানে ৬৭ জন নিহত হয়। এ ছাড়া কানাডার টরন্টোতে খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে অবতরণের সময় একটি বিমান উল্টে যাওয়ার ঘটনাও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে ও আতঙ্ক আরো বাড়ায়।

যদিও এই বিষয়ে জনমত জরিপ সীমিত, তবে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এক সাম্প্রতিক সমীক্ষা ইঙ্গিত দিয়েছে, দুর্ঘটনার এই চমকপ্রদ চিত্র কিছু মার্কিন ভোক্তার বিমানভ্রমণের প্রতি আস্থার ওপর প্রভাব ফেলেছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বব্যাপী বিমান দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণ করে বিবিসি ভেরিফাই দেখিয়েছে, গত দুই দশকে বিমান দুর্ঘটনার হার সাধারণত কমতির দিকে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পরিবহন সুরক্ষা বোর্ডের (এনটিএসবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০০৫ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দেশটিতে বিমান দুর্ঘটনার সংখ্যা কমেছে, যদিও এই সময়ে ফ্লাইটের সংখ্যাও বেড়েছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে দুর্ঘটনার সংখ্যা ৫২ ছিল, যা আগের বছরের জানুয়ারির তুলনায় (৫৮) এবং ২০২৩ সালের জানুয়ারির তুলনায় (৭০) কম।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইসিএও) তথ্য অনুযায়ী, ২০০৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে প্রতিমিলিয়ন বিমান ছাড়ার ওপর ভিত্তি করে দুর্ঘটনার হারও কমেছে।

বিশ্বব্যাপী বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা কমলেও কিছু বছর বড় দুর্ঘটনার কারণে তা হঠাৎ করে বেড়ে যায়।

যেমন ২০১৪ সালে দুটি বড় দুর্ঘটনা এই প্রবণতাকে উল্টে দেয়। মার্চে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের এমএইচ৩৭০ ফ্লাইটটি নিখোঁজ হয়, যেখানে ২৩৯ জন যাত্রী ছিল। এরপর জুলাইয়ে একই এয়ারলাইনসের আরেকটি বিমান এমএইচ১৭ ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিধ্বস্ত হলে প্রায় ৩০০ জন মারা যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতামত
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যানবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক স্যার ডেভিড স্পিগেলহালটার বিবিসি ভেরিফাইকে বলেন, ‘দুর্ঘটনার চেয়ে প্রাণহানির সংখ্যা হিসাব করলে তা খুবই অস্থিতিশীল হবে এবং একটি বড় দুর্ঘটনাই পরিসংখ্যানকে নাটকীয়ভাবে প্রভাবিত করতে পারে।’

ফিনল্যান্ডে বিমান দুর্ঘটনার সাবেক প্রধান তদন্তকারী ইসমো আলতোনেন জানান, সাম্প্রতিক মাসগুলোর দুর্ঘটনাগুলো বিমান নিরাপত্তা কমে যাওয়ার কোনো ইঙ্গিত দেয় না।

তিনি বলেন, ‘এই সময়ের দুর্ঘটনাগুলো ছিল বিভিন্ন ধরনের এবং এগুলোর মধ্যে কোনো যোগসূত্র নেই।’

নেটিজেনদের প্রভাব
সিনিয়র লেকচারার ও সাবেক পাইলট মার্কো চান বলেন, ‘বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির কারণে মানুষের মধ্যে এই ধারণা আরো ছড়িয়ে পড়ছে।’

এ ছাড়া বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান নিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একাধিক দুর্ঘটনা গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক মনোযোগ পেয়েছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে মাঝ আকাশে বিমানের একটি দরজা খুলে যাওয়ার ঘটনাটি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিটি দুর্ঘটনা গভীরভাবে তদন্ত করা হয় এবং সেই অনুযায়ী পাইলট প্রশিক্ষণকে উন্নত করা হয়। আলতোনেন বলেন, ‘আধুনিক সিমুলেটরগুলো এখন এতটাই উন্নত যে এগুলোকে বাস্তব বিমানের মতোই মনে হয়।’

নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোও নিরাপত্তা লঙ্ঘনের জন্য জরিমানা, লাইসেন্স স্থগিতকরণ ও পরিচালনায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে। নিরাপত্তা মান বজায় না রাখলে কোনো কোনো এয়ারলাইনসকে দেশ বা অঞ্চল থেকে নিষিদ্ধও করা হতে পারে।

আকাশপথ এখনো সবচেয়ে নিরাপদ
সাম্প্রতিক দুর্ঘটনার পরও বিমানভ্রমণ এখনো বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ ভ্রমণ মাধ্যম। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন দপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশটিতে পরিবহনসংক্রান্ত দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ৯৫ শতাংশই ঘটেছে সড়কে, যেখানে বিমান দুর্ঘটনার হার ছিল এক শতাংশেরও কম।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সুরক্ষা কাউন্সিলের একই বছরের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ১০ কোটি মাইল যাত্রায় যাত্রীবাহী বিমানে মৃত্যুর হার ছিল মাত্র ০.০০১, যেখানে যাত্রীবাহী যানবাহনে তা ছিল ০.৫৪। আলতোনেন বলেন, ‘যখন আপনি বিমান ধরতে যাবেন, তখন সাবধানে গাড়ি চালান। কারণ বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পথই পুরো যাত্রার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অংশ।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মায়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃত ২০, আরো হতাহতের শঙ্কা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
মায়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃত ২০, আরো হতাহতের শঙ্কা
সংগৃহীত ছবি

মায়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পে হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দেশটির একজন চিকিৎসক বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, শুক্রবার (২৮ মার্চ) স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে মায়ানমারে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। পরে ১টা ২ মিনিটের দিকে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার একটি আফটারশক আঘাত হানে।

ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল সাগাইং শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এবং ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই চিকিৎসক জানান, মায়ানমারের রাজধানীর একটি এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে প্রায় ২০ জনের মরদেহ আনা হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।

দেশটির মান্দালয় শহরে একটি মসজিদ ধসে পড়ার ঘটনা ঘটেছে।

দুজন প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে বলেন, যখন কম্পন শুরু হয় আমরা প্রার্থনা করছিলাম। মসজিদ ধসে তিনজন ঘটনাস্থলে মারা গেছেন।

এক সরকারি বিবৃতিতে মায়ানমার সরকার ভূমিকম্পের পর ছয়টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া ভয়াবহ এই ভূমিকম্পের পর আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে দেশটির জান্তা।

মন্তব্য

মায়ানমারে ভূমিকম্পের যে চিত্র দেখা গেছে

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
মায়ানমারে ভূমিকম্পের যে চিত্র দেখা গেছে
সংগৃহীত ছবি

মায়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। শুক্রবার (২৮ মার্চ) স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫০মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপের সাইটে বলা হয়েছে।

মায়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে সড়ক, ভবনসহ বিভিন্ন অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার কয়েকটি ছবি নিচে দেওয়া হলো-

9

মায়ানমারের শক্তিশালী ভূমিকম্পে ইরাবতী নদীর ওপর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে নির্মিত আভা সেতু ধসে পড়েছে।

 

8

ভূমিকম্পে মায়ানমারের রাজধানী নেপিডোয় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা

মন্তব্য

অবশেষে বৃষ্টিতে দক্ষিণ কোরিয়ার দাবানল নিয়ন্ত্রণে স্বস্তি

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
অবশেষে বৃষ্টিতে দক্ষিণ কোরিয়ার দাবানল নিয়ন্ত্রণে স্বস্তি
ছবিসূত্র : এএফপি

বৃষ্টিপাতের ফলে দক্ষিণ কোরিয়ায় গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেছে। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলা ভয়াবহ দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮ জনে দাঁড়িয়েছে। কর্তৃপক্ষ আজ শুক্রবার এই খবর জানিয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়া ২০২৪ সালে রেকর্ড তাপমাত্রার অভিজ্ঞতা অর্জনের পর কয়েক মাস ধরে এই অঞ্চলে গড়ের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হচ্ছে।

তবে বৃহস্পতিবার রাতভর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার ফলে দমকলকর্মীরা সবচেয়ে ভয়াবহ কিছু দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে।

এএফপির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি এলাকায় দাবানলে বিস্তীর্ণ এলাকা পুড়ে গেছে। প্রায় ৩৭ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া আগুনে উইসং শহরের ১ হাজার ৩০০ বছরের পুরনো একটি মন্দির পুড়ে গেছে। যেখান থেকে অনেক সাংস্কৃতিক নিদর্শন সরিয়ে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছিল। গত শুক্রবার সানচেং কাউন্টিতে আগুনের সূত্রপাত হয় এবং পরে তা উইসেওং কাউন্টিতে ছড়িয়ে পড়ে। প্রবল ও শুষ্ক বাতাসের কারণে দাবানল পার্শ্ববর্তী কাউন্টি গিয়ংবুক, উইসেওং, আন্দং, চেওংসং, ইয়ংইয়ং এবং সানচেং-এ ছড়িয়ে পড়ে।
 

আরো পড়ুন
ভয়াবহ দাবানলে দ.কোরিয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে কমপক্ষে ২৪

ভয়াবহ দাবানলে দ.কোরিয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে কমপক্ষে ২৪

 

আগুনের কারণে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেছে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যানজটে আটকে থাকা গাড়িগুলোর ওপরও আগুনের গোলা পড়ায় জনসাধারণ এলাকা ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত মোট ২৮ জন নিহত হয়েছেন এবং ৩৭ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে নয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে তিনি জানান।

নিহতদের মধ্যে একজন পাইলট রয়েছেন যার, হেলিকপ্টার গত বুধবার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করার সময় বিধ্বস্ত হয়েছিল।

অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়া আগুনের কবলে আটকা পড়ে চারজন দমকলকর্মী এবং অন্যান্য কর্মীও প্রাণ হারায়।ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হান ডাক-সু বলেছেন, ‘আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল এটি।’

দক্ষিণ কোরিয়া স্বাভাবিকের চেয়ে শুষ্ক পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে এবং কম বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এই বছর ইতিমধ্যেই ২৪৪টি দাবানলের ঘটনা ঘটেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২.৪ গুণ বেশি। সরকার দাবানলের অন্যতম প্রধান কারণ অবৈধভাবে কিছু পোড়ানোর বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ জোরদার করার এবং ব্যক্তিগত অসাবধানতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

সূত্র : এএফপি, বিবিসি

মন্তব্য

ভূমিকম্পে মায়ানমারে ধসে পড়ল ৯১ বছর পুরনো সেতু ‘সাগাইং’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ভূমিকম্পে মায়ানমারে ধসে পড়ল ৯১ বছর পুরনো সেতু ‘সাগাইং’
ভূমিকম্পে ধসে পড়ে ইরাবতী নদীর ওপর নির্মিত আভা সেতু (সাগাইং)। ছবি: ইউটিউব ভিডিও থেকে নেওয়া

মায়ানমারের শক্তিশালী ভূমিকম্পে ইরাবতী নদীর ওপর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে নির্মিত আভা সেতু ধসে পড়েছে। আজ স্থানীয় সময় বিকেলে ভূমিকম্পে সেতুটি ভেঙে পড়ে বলে মায়ানমারের সংবাদপত্র ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। 

আজ স্থানীয় সময় বিকেলে ভূমিকম্পে সেতুটি ভেঙে পড়ে। ৯১ বছর বয়সী আভা সেতু পুরোনো ‘সাগাইং’ সেতু নামেও পরিচিত।

এটি মায়ানমারের মান্দালয় ও সাগাইং অঞ্চলে ইরাবতী নদীর ওপর বিস্তৃত। ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে মান্দালয়, নেপিদো এবং অন্যান্য এলাকার বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়ে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল সাগাইং শহরের কাছে।

আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫০মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপের সাইটে বলা হয়েছে। তাতে আরো বলা হয়েছে, মায়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছে।

 প্রাথমিক ভূমিকম্পের মাত্র ১২ মিনিট পরেই মায়ানমারের সাগাইং অঞ্চলে ৬.৪ মাত্রার  আরো একটি শক্তিশালী আফটারশক আঘাত হেনেছে।

এ ঘটনায় দেশটির বিভিন্ন স্থানে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে থাইল্যান্ডেও। সেখানে নির্মাণাধীন একটি ৩০ তলা ভবন ধসে ৪৩ জন শ্রমিক আটকা পড়েছে বলে পুলিশ এবং চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ফুটেজে দেখা গেছে, সরকারি অফিসের জন্য নির্মিত বিশাল ভবনটি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। ব্যাংককের চতুচাক পার্কের কাছে ভবনটির ভেতরে ৫০ জন লোক ছিল। 

থাইল্যান্ডের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ইমার্জেন্সি মেডিসিন এক ফেসবুক পোস্টে বলেছে, সাত জন মানুষ রক্ষা পেলেও বাকি ৪৩ জন আটকা পড়েছে।

এদিকে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর মায়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা আন্তর্জাতিক মানবিক সাহায্যের জন্য বিরল অনুরোধ করেছে এবং ছয়টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। 

এএফপির সাংবাদিকরা জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইংকে নাইপিদোর একটি হাসপাতালে আসতে দেখেছেন, যেখানে মধ্য মায়ানমারে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের পর আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।

১৯৩০ সাল থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে দেশটিতে সাত মাত্রার ছয়টি ভূমিকম্প আঘাত হানে যার সবগুলোই ছিল সাগাইং ফল্টের কাছে। ভূপৃষ্ঠের নিচের ওই ফাটল দেশটির মাঝ বরাবর চলে গেছে। থাইল্যান্ড মূলত ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল নয়। কিন্তু সেখানে অনুভূত হওয়া প্রায় সব ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হয় প্রতিবেশী মিয়ানমার। ব্যাংককের ভবনগুলোর শক্তিশালী ভূমিকম্প সহ্য করার ক্ষমতাসম্পন্ন নয়, এ কারণে সেখানে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় অকাঠামোগত ক্ষতি হতে পারে।

সূত্র : ইরাবতী, এএফপি

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ