<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৫ আগস্ট। বাংলাদেশে থমথমে অবস্থা। সবার মনে একই প্রশ্ন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কী হবে আজ? সব জল্পনাকল্পনা ব্যর্থ করে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লং মার্চ টু ঢাকা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> সফল করতে সেদিন রাজধানীর রাস্তায় নেমে আসে লাখো মানুষ। ওই দিন সকালে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী অবস্থান নেয়। তবু বিভিন্ন দিক থেকে ঢাকামুখী জনস্রোত থামানো যায়নি। এমন এক পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা তার ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে দেশ ছাড়েন। আর তার দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়লে মিছিল নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অফিসে ঢুকে পড়ে সর্বস্তরের মানুষ। স্থান নেয় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অফিসের ছাদ থেকে শুরু করে সব জায়গায়। সেই মুহূর্তের তোলা একটি ছবি সারা বিশ্বের গণমাধ্যমে স্থান করে নেয়। হয়ে ওঠে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের শক্তিশালী এক ছবি। শুধু কি গণমাধ্যম, সারা বিশ্বের যোগাযোগ মাধ্যমেও হাজার হাজার বার শেয়ার হওয়া ছবিটিও ছিল সেটি। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত আলোকচিত্রী কে এম আসাদের তোলা সেই ছবি এবার জায়গা করে নিয়েছে বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনের </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বছরের সেরা ১০০ আলোচিত ছবি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">র তালিকায়। গত ২৬ নভেম্বর তালিকাটি প্রকাশ করেছে যুুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী এই ম্যাগাজিন। এবারের সেরা ছবি বাছাইয়ের প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন টাইম ম্যাগাজিনের সিনিয়র ফটো এডিটর কিম বুবেলো। তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের প্রচেষ্টা ছিল এমন সব ছবি বাছাই করা, যেসবের মধ্য দিয়ে শুধু সমসাময়িক ঘটনাগুলো তুলে ধরা হয়নি, বরং একটি নতুন বছরের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ উঠে এসেছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">টাইম ম্যাগাজিনে জায়গা পাওয়া বাংলাদেশের সেই ছবিটি তোলার গল্প জানার জন্য কথা হলো আলোকচিত্রী কে এম আসাদের সঙ্গে। যার ছবি নিয়ে এত্ত আলোচনা, তিনিই নাকি জেনেছেন দুই দিন পর। কারণ জিজ্ঞেস করতে হেসে জানালেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একটা কাজের জন্য ঢাকার বাইরে ছিলাম। ইন্টারনেটবিহীন সময় কাটিয়েছি। কাজ শেষে ঢাকায় ফিরে রাতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। পরের দিন এএফপির মনির ভাই আমাকে ফোন করে খুশির খবরটি দেন। শুনে বেশ একদণ্ডের জন্য বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। মনে হলো, ছবির মাধ্যমে আরেকটা ইতিহাসের সাক্ষী হলাম।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তো, সেদিনের ছবিটা তোলার ঘটনা মনে আছে আপনার?</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আরে কী বলেন, মনে থাকবে না আবার! জাতির জীবনের এত বড় ঘটনা কি চাইলেই এত সহজে ভুলে থাকা যায়? ছবিটা ৫ আগস্টের হলেও আমি কিন্তু সেই ১৫ জুলাই থেকেই মাঠে কাজ করছিলাম। সেই সময় তো আসলে জানতাম না ঘটনা কোন দিকে যাবে। এটা করছিলাম যতটুক সম্ভব আমার জায়গা থেকে ঘটনা বা মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দি করার জন্য। ৫ আগস্টও অন্যান্য দিনের মতো আমি বের হয়েছিলাম। দুপুর ১২টার দিকে শাহবাগে ছিলাম। হঠাৎ করে দেখতে পাই, অগণিত মানুষ এদিকে আসছে। হঠাৎ তারা রওনা হয় ফার্মগেটের দিকে। তখন বুঝতে পারি, তারা বোধ হয় গণভবনের দিকে যাবে। আমিও নানা পথ ঘুরে হাজির হই বিজয় সরনিতে।  তখন পর্যন্ত সেনারা রাস্তাটা ব্লক করে রেখেছিল। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর হঠাৎ করে সেই ব্লক ছেড়ে দেয় সেনাবাহিনী। তখন মিছিলটা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অফিসের দিকে এগোতে থাকে। তখন আমিও তাদের সঙ্গে দৌড়ে প্রধানমন্ত্রীর অফিসে ঢুকি। ভেতরে ছবি তুলে বের হতে দেখি, অফিসের ছাদ ও প্রাঙ্গণ মানুষজন দিয়ে ভরে গেছে। বিল্ডিংটা জুড়ে চারদিকে শুধু মানুষ আর মানুষ। সেই মুহূর্তটা ধরে রাখার জন্য প্রায় দুই ঘণ্টা ছবি তুলি। ছবি তোলা শেষ হলে প্রথমে কারওয়ান বাজার এসে খানিকটা বিশ্রামের জন্য থামি। এ জন্য এএফপির অফিসে যাই। এই ফাঁকে কিছু ছবি গেটি ইমেজের জন্য ছেড়ে দিই। কিন্তু তখন এএফপির মনিরউজ্জামান আমার তোলা দেখে লাফ দিয়ে বলে ওঠেন, এই ছবি তো আগামীকালের নিউইয়র্ক টাইমসে থাকা উচিত। তিনি কিছু আমার কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে এএফপিতে আপলোড করে দেন। এরপর তো বাকিটা ইতিহাস। এই ছবিটা তো অনেক জায়গায় প্রকাশিত হয়েছেই, বিশেষ করে বাইরের দেশগুলোর বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় ছবিটি প্রকাশিত হয়েছে। সেসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বলতে চাই যে ছবিটি দি ইকোনমিস্ট ম্যাগাজিনের আগস্ট সংখ্যার প্রচ্ছদেও ব্যবহৃত হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>