<p>মাদারীপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের স্কুলে বই উৎসব উদযাপিত হলো। আনন্দঘন পরিবেশে বই উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে শিশু শিক্ষার্থীরা। নতুন বছরে নতুন বইয়ের ঘ্রাণে মুগ্ধ ও উচ্ছ্বসিত বিদ্যালয়ের শিশুরা। প্রতিটি বইয়ের মলাট ওলট-পালট করে দেখতে থাকে তারা। একজন অন্যজনের প্রতি তাকিয়ে হাসাহাসিতে মেতে ওঠে। শিশুদের কাছে এ যেন এক নতুন অনুভূতি। তাদের সঙ্গে এ আনন্দ দেখে অতিথি ও অভিভাবকরাও আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।</p> <p>আজ রবিবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম ধাপে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শতাধিক শিক্ষার্থীর মধ্যে বই বিতরণ করা হয়। খুব শিগগিরই বাকিদের মধ্যে বই বিতরণ করা হবে। বই বিতরণ উৎসবে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ফাতিমা আজরিন তন্বী। এ সময় শিশু শিক্ষাথীরা অতিথিকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়। </p> <figure class="image" style="float:left"><img alt="বই" height="255" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/Nahid/Untitled-19.jpg" width="426" /> <figcaption>বসুন্ধরা শুভসংঘ বিদ্যালয়ে নতুন বই বিতরণ। ছবি : কালের কণ্ঠ</figcaption> </figure> <p>সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা এতদিন শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত ছিল। দুই বছর আগে বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে সদর উপজেলার পেয়ারপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় সুবিধাবঞ্চিত, শিক্ষার আলো থেকে দূরে থাকা ও প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া শিশুদের জন্য নন্দিত কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বিদ্যালয়টি উদ্বোধন করেন। এরপর আশ্রয়ণ প্রকল্প ও আশপাশের হতদরিদ্র পরিবারের শিশুরা শিক্ষার সুযোগ পায়। বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় ১৫০ জন শিক্ষার্থী বিনা মূল্যে লেখাপড়া করার সুযোগ পাচ্ছে।</p> <p>স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ফারজানা নতুন বই পেয়ে অনুভূতি প্রকাশ করে বলে, ‘আইজ খুব খুশি খুশি লাগতাচে। এত দিন নতুন বই পামু এই আশায় ছিলাম। আইজ মোরা নতুন বছরের শুরুতেই নতুন বই পামু ভাবতি পারি নাই। খুব আনন্দ লাগতাচে।’</p> <p>প্রথম শ্রেণির আসিফ তার মনের অনুভূতি প্রকাশ করে বলে, ‘নতুন বছর আর নতুন বই, মজাটাই আলাদা। খুব আনন্দ লাগতাচে, কী যে আনন্দ তা কইতে পারুম না।’</p> <p>একই শ্রেণির ছাত্র ফাহিমের মা মর্জিনা বেগম বলেন, ‘এখানে আগে স্কুল ছিল না। আমাগো পুলাপান দূরের স্কুলে যাইতে চাইত না। আবার গেলেও আমরা ওগো লাইগা চিন্তায় থাকতাম। এহন ঘরের কাছে স্কুল হইচে। টাকা-পয়সা ছাড়াই মোগো পুলাপান এই ইস্কুলে লেখাপড়া করে। আইজ নতুন বই পাইচে, আমাগোও খুব ভালো লাগতাচে।’ </p> <p>অনুষ্ঠানের অতিথি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ফাতিমা আজরিন তন্বী বলেন, ‘এখানে এসে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নতুন বই পাওয়ার আনন্দ দেখে খুব ভালো লাগছে। এখানে না আসলে বুঝতেই পারতাম না এই শিশুদের লেখাপড়ার প্রতি কতটা আগ্রহ। ওদের আনন্দ দেখে সত্যিই মনে হচ্ছে আমি নিজেই যেন শিশুদের সঙ্গে মিশে গেছি। আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো কিভাবে স্কুলটিকে আরো সম্প্রসারণ করে উন্নত করা যায়।’</p> <p>বই উৎসব অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বসুন্ধরা শুভসংঘ মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি ওহিদুজ্জামান কাজল। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘ মাদারীপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের জাহিদ, মোহাম্মদ দিদার মোল্লা, রোমান শিকদার ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকমণ্ডলী।</p>