ঢাকা, সোমবার ০৭ এপ্রিল ২০২৫
২৪ চৈত্র ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, সোমবার ০৭ এপ্রিল ২০২৫
২৪ চৈত্র ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৬

কনক্রিটের শহরে একখণ্ড সবুজায়ন

  • জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান
মোবারক আজাদ
মোবারক আজাদ
শেয়ার
কনক্রিটের শহরে একখণ্ড সবুজায়ন

ইট-পাথরের নগরীতে সবুজের দেখা ও নির্মল বায়ু পাওয়া খুবই ভার। তবে সরেজমিনে গেলে প্রকৃতিপ্রেমীদের সেই প্রত্যাশা পূরণ করে জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান (বোটানিক্যাল গার্ডেন)। দেশের জাতীয় এই উদ্ভিদ উদ্যানটি ঢাকার কেন্দ্রস্থল থেকে কিছুটা দূরে মিরপুরে অবস্থিত।

উদ্যানটি ঢাকা মেগাসিটির অন্যতম প্রধান সবুজ এলাকা হওয়ায় সেখানে প্রতিদিন কয়েক হাজার দর্শনার্থী আসেন।

দেখেন অসংখ্য প্রজাতির সবুজ বৃক্ষ, পশুপাখি ও বন্য প্রাণী। সম্প্রতি দর্শনার্থীদের মধ্যে একটি বড় অংশ শিক্ষার্থীরা। তাঁরা আসছেন গবেষণা করতে কিংবা শিক্ষাসফরে। বিনোদনের অন্যতম স্থানও এই উদ্যান।
কর্তৃপক্ষের দাবি, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনে এখন ভালো পরিবেশ বিরাজ করছে। গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে গিয়েও দেখা মেলে পাল্টে যাওয়া দৃশ্যের।

দেখা গেছে, সকাল থেকেই বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীমুখর এই বিনোদনকেন্দ্রটি। কেউবা বিভিন্ন প্রজাতির গাছের সঙ্গে ছবি তুলছেন, কেউবা নেমপ্লেট থেকে ডায়েরিতে লিখছেন গাছের নাম এবং বর্ণনা।

বেশ কয়েক জায়গায় দেখা গেছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাসফরে এসেছে প্রকৃতি থেকে পাঠ নিতে। আবার কেউবা প্রামাণ্যচিত্র কিংবা নাটক নির্মাণের অংশ হিসেবে শ্যুটিং করছেন এই সুবজ সমারোহে। প্রেমিক জুটিও প্রকৃতির মাঝে খুনসুটিতে সময় কাটাচ্ছেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়েও এসেছেন অনেকেই। তাঁদের একজন আনিসুর রহমান।
তিনি বলেন, সত্যি আগের চেয়ে অনেক পরিবর্তন হয়েছে এখানকার। আগে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখানে এসে ঘোরার মতো পরিবেশ ছিল না। এখন কর্তৃপক্ষের সচেতনতায় প্রেমিক জুটিরা যত্রতত্র বসতে পারেন না।

জানা গেছে, জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানটি দেশের উদ্ভিদের সর্ববৃহৎ সংগ্রহশালা হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। এটি প্রকৃতিপ্রেমী, উদ্ভিদবিদ এবং পরিবেশবাদী পর্যটকদের জন্য জ্ঞানের আধার। এটি একটি গবেষণাকেন্দ্র এবং গবেষকরা উদ্যান কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে গবেষণা করতে পারেন।

যা আছে এই সবুজ সমারোহে : দেশ ও বিদেশে জনপ্রিয় উদ্যানটিকে ৫৭টি সেকশনে সাজানো হয়েছে। এর মধ্যে গোলাপ বাগান, ক্যাকটাস হাউস, মৌসুমি বাগান, অর্কিড হাউস, ফার্ণ হাউস, শাপলা পুকুর, পদ্ম পুকুর, ছয়টি লেক ও দুটি নার্সারি অন্যতম। শিক্ষার্থী, গবেষক, পর্যটক এবং প্রকৃতিপ্রেমীসহ প্রতিবছর প্রায় ১৫ লাখ দর্শনার্থী উদ্যানটিতে আসেন। এটি দেশের জাতীয় ঐতিহ্য এবং বিরল জিনপুল সংগ্রহের কেন্দ্র। এই উদ্যানটিতে ১৪৩টি পরিবারভুক্ত, ৫৯৫টি গণের অধীন এক হাজার ৪২ প্রজাতিরও বেশি বীরুৎ, গুল্ম, বৃক্ষ এবং জলজ উদ্ভিদ রয়েছে। এখানে জলজ উদ্ভিদের বিশাল সংগ্রহসহ প্রায় ৮০ হাজার বৃক্ষ, বীরুৎ ও গুল্ম রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক উদ্ভিদ উদ্যানে আনা হয়েছে এবং স্থানীয় জলবায়ুর সঙ্গে মানিয়ে এগুলোকে অভিযোজিত এবং নিয়মিতভাবে বংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানায়, এই উদ্যানটির প্রধান লক্ষ্য উদ্ভিদ সংরক্ষণ করা। উদ্যানে পক্ষিকুলের সংখ্যা প্রচুর এবং ঋতুভেদে দর্শনার্থীরা স্থানীয় পাখির সঙ্গে প্রচুর পরিযায়ী পাখিও দেখতে পান। উদ্যানে ১৪টি জলাধার আছে, যা বিভিন্ন প্রজাতির জলজ পাখির আশ্রয়স্থল।

সাত ক্যাটাগরিতে প্রবেশমূল্য : ১২ বছরের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক দর্শনার্থীদের ৩০ টাকা, ছয় থেকে ১২ বছরের মধ্যে ১৫ টাকা, পাঁচ বছরের মধ্যে ফ্রি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আগত গ্রুপের (১০১-২০০) জন্য এক হাজার ৫০০ টাকা, বিদেশি পর্যটক ৫০০ টাকা, স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণকারী প্রাতঃভ্রমণ বার্ষিক প্রবেশ কার্ড ফি শর্তসাপেক্ষ ৫০০ টাকা।

বোটান্যিকাল গার্ডেনের পরিচালক শওকত ইমরান আরাফাত বলেন, ইট-পাথর বদলে দিয়ে ন্যাচারাল (প্রাকৃতিক) বিষয়গুলো যুক্ত করার চেষ্টা করছি। খুব শিগগির খালি পায়ে হাঁটার জন্য একটি মাটির রাস্তা তৈরির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। জাতীয় প্রতিষ্ঠানটির এত দিন কোনো ওয়েবসাইট ছিল না, সেটি করেছি।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মোহাম্মদপুরে সাঁড়াশি অভিযানে গ্রেপ্তার ১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
মোহাম্মদপুরে সাঁড়াশি অভিযানে গ্রেপ্তার ১৫

সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার এ কে এম মেহেদী হাসান এই তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে শনিবার দিনভর মোহাম্মদপুর ও আদাবরের বিভিন্ন অপরাধপ্রবণ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন জাবেদ, রুবেল, মুরাদ, তাহিদুল, মিরাজ, সাম, মুনসুর, আরিফ, মন্টি পাটোয়ারী, জামিল, সজল, শোয়েব, মাহাফুজ, আরিফ ও রাশেদ।

মন্তব্য

রাজবাড়ীর সাবেক এমপি কাজী কেরামত আলী রাজধানীতে গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
রাজবাড়ীর সাবেক এমপি কাজী কেরামত আলী রাজধানীতে গ্রেপ্তার

রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক এমপি কাজী কেরামত আলীকে রাজধানীর মহাখালী থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনের অভিযোগে মামলা আছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবিপ্রধান) রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, কাজী কেরামত আলীর বিরুদ্ধে ঢাকা ও রাজবাড়ীতে একাধিক মামলা রয়েছে।

এর যেকোনো একটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।

মন্তব্য

‘গরমে সব আদালতে যেন এসি দেওয়া হয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
‘গরমে সব আদালতে যেন এসি দেওয়া হয়’

গরমে অধস্তন আদালতের এজলাসে (বিচারকক্ষে) শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এয়ার কন্ডিশনার-এসি) বসাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার। গতকাল রবিবার তিনি এ অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, গরমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের কালো গাউন পরতে হবে।

গরমে কালো গাউন পরা নিয়ে গত ২৫ মার্চ বিজ্ঞপ্তি দেয় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমেদ ভূঞার দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশব্যাপী তাপপ্রবাহের কারণে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগে মামলা শুনানিকালে আইনজীবীদের গাউন পরিধানের আবশ্যকতা শিথিল করা হলো। এ নির্দেশনা ৬ এপ্রিল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

গতকাল চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে বিষয়টি তুলে ধরেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম। সুপ্রিম কোর্টের এই বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ট্রাইব্যুনাল গরমে গাউন পরা শিথিল করবে কি না জানতে চান।

তখন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বলেন, এখানে তো এসি আছে, তাই এখানে গাউন পরতে হবে। এসি থাকলে গাউন পরতে সমস্যা কী? তার পরও কেউ যদি গরমে গাউন পরতে অসুবিধা বোধ করেন, আমাদের বললে আমরা সেটি বিবেচনা করব।

চেয়ারম্যান বলেন, নিম্ন আদালতের প্রতিটি কোর্টে যেন এসি থাকে, সেই ব্যবস্থা করা উচিত। সেখানে বিচারপ্রার্থী, আসামি, আইনজীবীসহ অনেক মানুষের উপস্থিতি থাকে।

এসি না থাকলে বিচারকরা কিভাবে বিচার করবেন? গরমে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়। আমাদের হাম্বল রিকোয়েস্ট, সব আদালতে যেন এসি দেওয়া হয়।

ট্রাইব্যুনালে এ সময় চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও চিফ প্রসিকিউটরের পরামর্শক ব্রিটিশ আইনজীবী টবি ক্যাডম্যানও উপস্থিত ছিলেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ছুটি শেষে খুলেছে সচিবালয় কাটেনি ঈদের আমেজ

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
ছুটি শেষে খুলেছে সচিবালয় কাটেনি ঈদের আমেজ

ঈদুল ফিতরের টানা ৯ দিনের ছুটি শেষে গতকাল রবিবার খুলেছে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়। কর্মস্থলে ফিরছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে ঈদের আমেজ এখনো কাটেনি। প্রথম কর্মদিবসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে ফিরে সহকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে কর্মদিবস শুরু করেছেন।

অফিসে এসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি ও গল্প করছেন। 

গতকাল সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ঘুরে দেখা যায়, কোনো কোনো মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে বেশির ভাগই উপস্থিত, আবার অনেক কক্ষে চেয়ার-টেবিল ফাঁকা পড়ে রয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একে অপরের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। কোলাকুলি করছেন একে অপরের সঙ্গে।

সচিবালয়ে গাড়ি রাখার স্থানগুলো অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিক ছিল। তবে সচিবালয়ের করিডর, লিফটগুলোর সামনে ভিড় ছিল না, আর সচিবালয়ে দর্শনার্থী কক্ষটিও ছিল ফাঁকা। আর গাড়ি রাখার স্থানগুলো অন্যান্য সময়ের মতো গাড়িতে ভরা ছিল না।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রবিবার অফিস খুলেছে, তবে অনেকেই ঐচ্ছিক ছুটি উপভোগ করছেন।

ঈদের পরে প্রথম কর্মদিবস মোটামুটি এমনই হয়ে থাকে। খুব একটা কাজ হয় না, আবার অনেকেই ছুটিতে থাকেন। যাঁরা অফিসে এসেছেন তাঁরাও গল্প করে সময় কাটাচ্ছেন। আগামী সপ্তাহ থেকে সচিবালয়ের অফিস পুরোদমে শুরু হবে বলে মনে করেন তাঁরা।

গত সোমবার দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে।

ঈদ উপলক্ষে ২৯, ৩০, ৩১ মার্চ এবং ১ ও ২ এপ্রিল (শনি, রবি, সোম, মঙ্গল ও বুধবার) সাধারণ ছুটি এবং ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এরপর ৪ ও ৫ এপ্রিল (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। সব মিলিয়ে এবার ঈদে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টানা ৯ দিন ছুটি ভোগ করেছেন। ছুটি শেষে গতকাল অফিস শুরু হয়েছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ