তুরস্কের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)। সেই সঙ্গে পিকেকের প্রতিষ্ঠাতা ও কারাবন্দি নেতা আবদুল্লাহ ওকালানের নিরস্ত্রীকরণের আহ্বানে সাড়া দিয়েছে দলটি। গতকাল শনিবার পিকেকেপন্থী সংবাদ সংস্থা ফিরাত (এএনএফ) জানিয়েছে, এ ঘটনাকে তুরস্কের সঙ্গে ৪০ বছরের সংঘাতের অবসানের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পিকেকের নির্বাহী কমিটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘শান্তি ও গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য নেতা ওকালানের আহবান বাস্তবায়নের পথ প্রশস্ত করতে আমরা শনিবার (গতকাল) থেকে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করছি।
’
তারা আরো জানিয়েছে, ‘আমরা এই আহ্বানের বিষয়বস্তুতে একমত এবং এটি অনুসরণ ও বাস্তবায়ন করব। আমাদের কোনো বাহিনী আক্রমণের শিকার না হলে তারা সশস্ত্র কোনো পদক্ষেপ নেবে না। আংকারা ওকালানকে মুক্তি দেবে, যাতে তিনি নিরস্ত্রীকরণের প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিতে পারেন।’
গত বৃহস্পতিবার কারাগার থেকেই ওকালান তাঁর সংগঠনকে অস্ত্র ত্যাগ, দল ভেঙে দেওয়া এবং তুরস্কের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের লড়াই বন্ধ করার ঐতিহাসিক আহবান জানান।
৭৫ বছর বয়সী ওকালান ১৯৯৯ সাল থেকে রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে ইস্তামবুলের ইমরালি দ্বীপে বন্দি রয়েছেন। তবে বন্দি অবস্থায়ও তিনি পিকেকের ওপর ব্যাপক প্রভাব বজায় রেখেছেন।
তাঁর ঘোষণার এক দিন পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান এটিকে ঐতিহাসিক সুযোগ বলে স্বাগত জানান এবং আশ্বাস দেন, তাঁর সরকার আলোচনাকে সফল পরিণতিতে পৌঁছানোর জন্য নিবিড় পর্যবেক্ষণ করবে। এরদোয়ান আরো বলেন, যখন সন্ত্রাস ও অস্ত্রের চাপ দূর হবে, তখন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক ক্ষেত্র স্বাভাবিকভাবেই প্রসারিত হবে।
তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) পিকেকেকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। ১৯৮৪ সাল থেকে এই গোষ্ঠী তুরস্কের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ চালিয়ে আসছে, যার লক্ষ্য কুর্দিদের জন্য একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। তুরস্কের সাড়ে আট কোটি জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ কুর্দি। সূত্র : আলজাজিরা