<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রাম নগরে দিন দিন বাড়ছে নীরব ঘাতক শব্দদূষণ। নগরের ৩০টি স্থানে (স্পট) পরীক্ষা করে সবখানেই মাত্রাতিরিক্ত শব্দদূষণ পেয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এমনকি ঘোষিত নীরব এলাকায়ও অতিরিক্ত মাত্রায় শব্দদূষণ পাওয়া গেছে। ওই ৩০ স্থানে শব্দের মাত্রা ৫৫.৫ থেকে ৮২ ডেসিবেল, যা সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সড়কে গাড়িতে হাইড্রোলিক হর্নের যথেচ্ছ ব্যবহার, শিল্প-কারখানা, সভা-সমাবেশের মাইক, কনসার্ট, যত্রতত্র কারণে-অকারণে মাইকিং, সাউন্ড বক্স ও নির্মাণকাজের শব্দে অতিষ্ঠ চট্টগ্রাম নগরবাসী।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নাক, কান, গলা রোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মিটন চাকমা কালের কণ্ঠকে বলেন, শব্দদূষণের বহুমাত্রিক ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। শব্দদূষণের ফলে মাথা ব্যথা ও মনোসংযোগ নষ্ট, অনিদ্রা, কানে কম শোনা, আংশিক বা পুরোপুরি বধিরতা, মানসিক চাপ, হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ, গর্ভস্থ বাচ্চা নষ্ট বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর জন্মসহ নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সচেতনতার মাধ্যমে শব্দদূষণ কমিয়ে আনতে হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম গবেষণাগার কার্যালয়ের পরিচালক নাসিম ফারহানা শিরীন বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা প্রতি মাসেই চট্টগ্রাম নগরের ৩০টি স্পটের শব্দের মাত্রা পরীক্ষা করে থাকি। নভেম্বর মাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী সব স্পটেই মানমাত্রার চেয়ে বেশি শব্দের তীব্রতা পেয়েছি। শব্দদূষণ রোধে আমরা অভিযান চালিয়ে জরিমানা করি। তবে মানুষকে সচেতন করার ওপর বেশি জোর দিই। আমরা যানবাহন চালক, বিভিন্ন ধর্মীয় নেতা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান করে থাকি, যাতে শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে মানুষ জানতে পারে। মানুষ সচেতন না হলে শব্দদূষণ থেকে বের হওয়া কঠিন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম গবেষণাগারের তথ্যমতে, গত নভেম্বর মাসে নগরের ৩০টি স্থানে পরীক্ষায় দেখা গেছে, শব্দদূষণ সহনীয় মাত্রা অতিক্রম করেছে। নগরের বিভিন্ন স্থানকে নীরব, আবাসিক, মিশ্র, বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকা নামে ভাগ করে শব্দদূষণ পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে নীরব এলাকা হলো হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ ও আবাসিক এলাকা। এসব এলাকায় শব্দের সহনীয় মাত্রা ৫০ ডেসিবেল। কিন্তু নভেম্বরে চমেক হাসপাতাল গেটে শব্দদূষণের মাত্রা ছিল ৭৩ ডেসিবেল। জামাল খান মোড়ের ডা. খাস্তগীর স্কুলের সামনে ছিল ৬৯ ডেসিবেল।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একইভাবে পাহাড়তলী গার্লস হাইস্কুলের সামনে ৭০ ডেসিবেল, ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে ৬৫ ডেসিবেল, ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চট্টগ্রামের সামনে ৬০ ডেসিবেল, চিটাগাং গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুলের সামনে ৬৪ ডেসিবেল, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি স্কুলের (বাওয়া) সামনে ৭০ ডেসিবেল, চট্টগ্রাম কলেজের সামনে ৫৫.৫ ডেসিবেল, সিটি কলেজের সামনে ৬৪.৫ ডেসিবেল, চট্টগ্রাম মা ও শিশু মেডিক্যাল কলেজের সামনে ৬৯ ডেসিবেল, আন্দরকিল্লা জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালের সামনে ৬৭ ডেসিবেল, লালখান বাজার মমতা ক্লিনিকের সামনে ৭৪ ডেসিবেল, এ কে খান আল-আমিন হসপিটালের সামনে ৬৫.৫ ডেসিবেল, পাঁচলাইশ সার্জিস্কোপ হসপিটালের সামনে ৭৩.৫ ডেসিবেল এবং পূর্ব নাসিরাবাদের সাদার্ন হসপিটালের সামনে ৭১ ডেসিবেল শব্দ পাওয়া যায়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আবার মিশ্র এলাকা হিসেবে শব্দের মানমাত্রা ৭০ ডেসিবেল থাকার কথা হলেও মুরাদপুর একুশে হাসপাতালের সামনে ৭৩ ডেসিবেল এবং মেহেদীবাগ ম্যাস্ক হাসপাতালের সামনে ৭৬ ডেসিবেল ছিল।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আবাসিক এলাকা হিসেবে শব্দের মানমাত্রা ৫৫ ডেসিবেল হলেও আমিরবাগ আবাসিকে ৭৪ ডেসিবেল, চান্দগাঁও আবাসিকে ৬০ ডেসিবেল, হালিশহর কে-ব্লক আবাসিকে ৬৮ ডেসিবেল, কল্পলোক আবাসিকে ৭০.৫ ডেসিবেল, হিলভিউ আবাসিকে ৭০ ডেসিবেল, কসমোপলিটন আবাসিকে ৬৯ ডেসিবেল এবং খুলশী (দক্ষিণ) আবাসিকে ৬৯ ডেসিবেল ছিল।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নগরের বাণিজ্যিক এলাকায় শব্দের মানমাত্রা ৭০ ডেসিবেল হওয়ার কথা থাকলেও জিইসি মোড়ে সর্বোচ্চ ৭৫ ডেসিবেল, বহদ্দারহাট মোড়ে ৭৬.৫ ডেসিবেল, আগ্রাবাদ মোড়ে ৭৬ ডেসিবেল, সিইপিজেড মোড়ে ৭৭ ডেসিবেল এবং অক্সিজেন মোড়ে ৮২ ডেসিবেল পায় পরিবেশ অধিদপ্তর।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম গবেষণাগারের তথ্যমতে, গত অক্টোবর মাসে নগরের ৩০টি স্থানে শব্দের মাত্রা ছিল ৫৭.৫ থেকে ৮১ ডেসিবেল। আগস্টে তা ছিল ৬৭ থেকে ৮৪.৫ ডেসিবেল। আর জুলাইয়ে ৬৪.৫০ থেকে ৮০.৫০ ডেসিবেল, জুনে ৬৬.৫ থেকে ৮৭ ডেসিবেল এবং মে মাসে ৬৯ থেকে ৮৬ ডেসিবেল ছিল। অর্থাৎ গেল ছয় মাসেই শব্দের মান পাওয়া গেছে বেশি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিভিন্ন বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্কুল-কলেজের পাশে জোরে হর্ন ও মাইক বাজানো নিষেধের সাইনবোর্ড টাঙানো আছে। কিন্তু কেউ তা মানছে না। তা ছাড়া পরিবেশ আইন অনুযায়ী যানবাহনে হাইড্রোলিক হর্ন লাগানো নিষেধ হলেও ট্রাক ও বাসে এর ব্যবহার রয়েছে। বিভিন্ন নির্মাণকাজের সময়ও অতিরিক্ত শব্দ হয় বলে অভিযোগ নগরবাসীর।</span></span></span></span></span></p>