<p style="text-align:justify">নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাবেক প্রধান হারুন-অর-রশীদের ক্যাশিয়ার খ্যাত মোকাররম সর্দার (৪৮) রাতে গ্রেপ্তার হয়ে আবার দিনেই জামিন লাভ করেছেন। সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ বদিউজ্জামানের আদালত তাকে জামিন প্রদান করেন।</p> <p style="text-align:justify">বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরির্দশক মো. কাইয়ুম খান বলেন, আদালতে উঠানোর আগেই বাদীপক্ষ এসে আপস করে। যার কারণে আদালতে উঠানোর সঙ্গে সঙ্গেই মোকাররম সর্দারকে জামিন প্রদান করা হয়। সেই সঙ্গে কারাগারে যাওয়ার আগেই কোর্ট গারদ থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।</p> <p style="text-align:justify">এর আগে গত ২৭ অক্টোবর রাতে ফতুল্লার আলীগঞ্জ এলাকায় যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে মোকাররম সর্দারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি নারায়ণগঞ্জে বসবাস করার পাশাপাশি কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। গত ৫ আগস্টে পরিবর্তিত পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে তিনি অপসারিত হয়েছেন।</p> <p style="text-align:justify">ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম বলেন, রবিবার রাতে যৌথ বাহিনী তাকে আটক করে ফতুল্লা থানায় সোপর্দ করে। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও অপহরণ মামলা ছিল। আমরা তাকে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করি। তার বিরুদ্ধে অন্য কোনো মামলা ছিল না।</p> <p style="text-align:justify">এদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ইউনুস ইমাম বলেন, ‘যে মামলায় মোকাররমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, সেই মামলায় আদালতে উঠানোর আগেই বাদী আপস করেছেন। আমরা আদালতের কাছে বিষয়টি উপস্থাপন করেছি আদালতে আমাদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই জামিন প্রদান করেছেন।’</p> <p style="text-align:justify">বাদীপক্ষের আইনজীবী ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এইচ আনোয়ার প্রধান বলেন, মোকাররমে বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও অপহরণ মামলা করেছিলেন ফতুল্লার কুতুবপুরের মো. শাহ আলম। সেই মামলায় মোকাররমকে গ্রেপ্তার করে তাকে আদালতে উঠানোর আগেই বাদী শাহ আলম এসে আপস করেছেন। ফলে আদালত মোকাররমকে জামিন দিয়েছেন।</p> <p style="text-align:justify">জানা যায়, চলতি বছরের ২ অক্টোবর চাঁদা দাবি ও মারধরের অভিযোগে সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন-অর-রশীদ, মোকাররমসহ ১১ জনকে আসামি করে ফতুল্লা থানায় মামলা হয়। মামলার শাহ আলম ২০ লাখ টাকা ছিনতাই ও চাঁদাবাজির অভিযোগে এ মামলা করেন।</p> <p style="text-align:justify">মোকাররম সর্দারের বাবা নূরুল ইসলাম নব্বইয়ের দশকের দিকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় আসেন। মোকাররম স্থানীয় শ্রমিক লীগ নেতা কাউছার আহম্মেদ পলাশের হাত ধরে শ্রমিক সর্দার হন। পলাশের সহায়তায় চাঁদাবাজিসহ জাহাজের মাল লুট করে প্রচুর সম্পদের মালিক হন।</p> <p style="text-align:justify">২০১৮ সালের ডিসেম্বরে হারুন-অর-রশীদ নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) হয়ে এলে তার প্রশ্রয়ে মোকাররম সর্দার জাহাজের পণ্য চোরাইয়ের সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ নেন। বিভিন্ন স্পট থেকে হারুনের জন্য চাঁদা আদায় করে দিতেন মোকাররম। কিশোরগঞ্জেও সম্পত্তি গড়েছেন মোকাররম। গত ২১ মে তিনি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশকে ব্যবহার করে তাকে জিতিয়ে আনেন এমন অভিযোগ রয়েছে।</p>