সাভারের আশুলিয়ায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে কল্পনা আক্তার নামে এক নারীর বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাট ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারী আশুলিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। শুক্রবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন। এর আগে, বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টার দিকে আশুলিয়ার উত্তর গাজিরচট বুড়িরবাজার এলাকায় এ হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
আশুলিয়ায় বসতবাড়িতে ভাংচুর-লুটপাট ও শ্লীলতাহানি
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি

হামলায় অভিযুক্তরা হলেন- আশুলিয়ার উত্তর গাজিরচট বুড়িরবাজার এলাকার মোঃ মানিক হাজী, তার ছেলে মো. ফয়সাল, মো. এরশাদ, মো. সালাউদ্দিন, মানিক হাজীর স্ত্রী মোসা. রিনা বেগম, তার মেয়ের জামাই ভাদাইল এলাকার মো. ইসরাফিল, মানিক হাজীর ম্যানেজার মো. সুরুজ মিয়া ও মো. সেকেন্দারসহ অজ্ঞাতনামা ৩০/৪০ জন।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী কল্পনা আক্তার আশুলিয়ার বাইপাইল মৌজায় সিএস এবং এসএ নম্বর ১০৫, আরএস ৪১৫, বিআরএস ২৭৪৫ নম্বর দাগে ১১.৫০ শতাংশ জমিতে ২৪টি রুম করে ভাড়া দিয়েছেন এবং ২টি রুমে তিনি নিজেই পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে উক্ত জমি ও বাড়ি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করছিলো। গত ২৭ মার্চ বিকাল ৪ টার দিকে দেশীয় অস্ত্রসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে জমিটি জোরপূর্বক দখলের উদ্দেশ্যে হামলা চালায়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মানিক হাজী ও তার ছেলেদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুরের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।
সম্পর্কিত খবর

বোনকে চুলের মুঠি ধরে মারধর, ভাইকে কুপিয়ে জখম
জেলা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে অটোরিকশায় ভাই-বোনের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। বোনকে বাঁচাতে ভাই প্রতিহত করায় তাকে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সোমবার (৩১ মার্চ) রাত সাড়ে ৭টার দিকে মহাসড়কের ঈশ্বরগঞ্জের গালাহার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে বিপ্লব মিয়া (২৩) গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক দিয়ে অটোরিকশায় ছোট বোনকে (১৩) নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে সশস্ত্র অবস্থায় ৪-৫ জনের একটি দল পথরোধ করে অটোরিকশার সামনে কোপ দেয়।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাস্থলে গেলে আব্দুল খালেক নামে এক ব্যক্তি জানান, বাড়ি থেকে চিৎকার শুনে বের হয়ে দেখতে পান এক যুবক দৌড়ে তার বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করছেন। পেছনে অস্ত্র হাতে ধাওয়া করছে কয়েকজন।
অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্বজনরা কথা বলতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঈশ্বরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রজিত কুমার জানান, এ ঘটনায় একজন কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফরিদপুরে সেফটিক ট্যাংক বসাতে গিয়ে মাটি চাপায় শ্রমিকের মৃত্যু
ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সেপটিক ট্যাংক বসাতে গিয়ে মাটির নিচে চাপা পড়ে শফিকুল শেখ (২৭) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বিকেলের দিকে বোয়ালমারী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আধাঁরকোঠা স্টেডিয়াম পাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শফিকুল শেখ উপজেলার ময়না ইউনিয়নের ময়না গ্রামের মৃত মোমিন শেখের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আঁধারকোঠা এলাকার স্টেডিয়াম এলাকার কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমানের ৫ তলা ভবনের নিচতলায় সেফটিক ট্যাংক নির্মাণের কাজ করছিল শফিকুলসহ দুইজন শ্রমিক। এ সময় তারা প্রায় ২০ ফুট গভীর দুটি গর্ত খনন করে। পরে ওই গর্তে রিংস্লাব বসানোর সময় বিকেল ৪টার গিকে হঠাৎ গর্তের পাশের স্তুপ ধসে মাটি চাপা পড়ে শফিকুল। এ সময় উপরে থাকা অপর শ্রমিকের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ইমরান হুসাইন বলেন, ‘হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। ধারণা করা যাচ্ছে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়েছে।
বোয়ালমারী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন লিডার আব্দুল খালেক বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৩০-৪০ মিনিট তৎপরতা চালিয়ে তাকে উদ্ধার করি। যেখানে গর্ত খুঁড়া হয়েছে তা ভরাটকৃত বালুমাটি হওয়ায় ধসে মাটির নিচে চাপা পড়ে ওই শ্রমিক।’
বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান জানান, ‘লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। তবে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে মামলা নেওয়া হবে।

জুলাই হত্যাকাণ্ড
দ্রুত বিচার চান কুমিল্লার তিন শহীদ পরিবার
শাহীন আলম, কুমিল্লা (উত্তর)

জাতীয় নির্বাচনের অন্তবর্তী সরকারের কাছে জুলাই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি করেছেন কুমিল্লার দুই শহীদ পরিবারের সদস্যরা। তারা বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় যেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। যারা রক্ত দিয়ে দেশ শত্রুমুক্ত করল তাদের হত্যার বিচারের কথা তারা বলছে না। তারা ক্ষমতায় গিয়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চায়।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দুপুরে শহীদ জাহিদ হোসেন রায়হান (রাব্বি)র বাবা ফজর আলী, মা আয়শা বেগম, বিকালে শহীদ আবদুর রাজ্জাক রুবেলের বৃদ্ধা মা হোসেনে আরা বেগম ও স্ত্রী হ্যাপী আক্তার এবং শহীদ জহিরুল ইসলাম রাসেলের মা মোর্শেদা বেগম এমন দাবি করেন।
শহীদ আবদুর রাজ্জাক রুবেলের স্ত্রী হ্যাপী আক্তার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যারা হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত জড়িত পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না। তারা প্রকাশ্যে কিভাবে ঘুরাঘুরি করছে, ইউএনও-ওসির সাথে মিটিং করছে।
শহীদ জাহিদ হোসেন রায়হানের বাবা ফজর আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে এর বিচার হবে রাষ্ট্রীয় গণহত্যার বিচার। তৎকালীন সময়ে যারা ক্ষমতায় ছিল, সরকারের আমলা ছিল যাদের নেতৃত্বে এসব হত্যাকাণ্ড হয়েছে সকলকে বিচারের মুখোমুখি করে শাস্তি দিতে হবে। যারা রাষ্ট্রীয় গণহত্যার মামলার আসামি তারা আদালত থেকে জামিন পায় কিভাবে ? অপরাধীদের জামিন দেয়া অগ্রহণযোগ্য।
তিনি আরো বলেন, ‘শুধু দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিলেই হবে না আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। যারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চায় তারাও একই অপরাধে অপরাধী। এখন তো কোন দলে নেই। ড. ইউনূস ক্ষমতায় থেকেই আগে বিচার নিশ্চিত করে তারপর নির্বাচন দিক। আমার রাজনীতি করার ইচ্ছে নেই যারা রাজনীতি করে গাড়ি-বাড়ি করার ইচ্ছা তারাই নির্বাচন দাও-নির্বাচন দাও করে। আমরা নির্বাচন চাই না বিচার সম্পন্ন করার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত উনি থাকবেন। তারপর নির্বাচন। আমরা সহযোগিতা করব, আমার এক সন্তান (শহীদ) গেছে দরকার হলে আমিও (শহীদ) যাব। তবুও অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব।’
রায়হান (রাব্বি)র মা আয়শা বেগম বলেন, ‘আমি চাই আমার সন্তানের বিচার। বিচার শেষ হওয়া ছাড়া কোন নির্বাচন চাই না। গত ঈদে আমার রাব্বি বাড়িতে খেলাধূলা করেছে। ঢাকা থেকে এসে ব্যাগ রেখে বলছে মা কি আছে দাও, ক্ষুধা লেগেছে এই বছর আমি পথ চেয়ে আছি কখন আমার রাব্বি এসে ডাক দিবে।’
শহীদ জহিরুল ইসলাম রাসেলের বৃদ্ধা মা মোর্শেদা বেগম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলে হারিয়ে শোকে কাতর। সংসার তছনছ হয়ে গেছে। সাড়ে তিন বছরের মেয়ে ঝুমা বারবার বাবার কবরের পাশে বসে বাবাকে ডাকে ‘বাবা ওঠো ওঠো’। এই শোক জুলাইয়ে যারা শহীদ হয়েছে প্রতিটি পরিবারে রয়েছে। আমি সন্তান হত্যার বিচার চাই। বর্তমান সরকার যিনি আছেন তিনি দ্রুত এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করে তারপর নির্বাচন দিবেন বলে আশা করছি।’
গত বছরের ৫ আগস্ট ঢাকার খিলগাঁও এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হয় দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নেরে খয়রাবাদ গ্রামের জাহিদ হোসেন রাব্বি। পরদিন ৬ আগস্ট গ্রামের একটি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। রাব্বি এসএসসি পরীক্ষার পর খিলগাঁও এলাকার একটি মার্কেটে পাঞ্জাবি দোকানে কাজ করতেন। গত ৪ আগস্ট দেবিদ্বারে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের গুলিতে নিহত হয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রাজ্জাক রুবেল। তিনি কুমিল্লা-চট্টগ্রাম রোডে বাস চালক ছিলেন। পরদিন ৫ আগস্ট তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। একই দিন ৪ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার গুলিস্থান এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হয় জহিরুল ইসলাম রাসেল। রাসেল একটি জুতার ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন।
এদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার দেবিদ্বারে নিহত শহীদদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবিরের একটি প্রতিনিধি দল। তারা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক রুবেল, শহীদ জহিরুল ইসলাম রাসেল ও শহীদ রায়হান রাব্বির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং খোঁজ-খবর নেন।। এক পর্যায়ে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো.জাহিদুল ইসলাম নিহত রায়হান রাব্বির বাবা ও মায়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেন এবং ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারকে যেকোন সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনিপরে শিবিরের প্রতিনিধি দল শহীদদের কবর জিয়ারত করেন।

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা, কুমিল্লায় ৩ বাসযাত্রী নিহত
চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

কুমিল্লার চান্দিনায় যাত্রবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তিনজন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চান্দিনা উপজেলার পালকি সিনেমা হলসংলগ্ন ইন্দ্রারচর এলাকা এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় আরো অন্তত ২৫ জন যাত্রী আহত হয়।
তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
চান্দিনা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার লিডার বাহারুল ইসলাম জানান, তিশা প্লাস পরিবহনের বাসটি ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে কুমিল্লা যাচ্ছিল। চান্দিনার ইন্দ্রারচর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের পাশে থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছের সাথে ধাক্কা লেগে দুমড়েমুচড়ে যায় বাসটি। এতে ঘটনাস্থলে একজন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পরে আরো দুজন মারা যায়। আহতদের উদ্ধার করে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ আশপাশের হাসপাতালগুলোতে পাঠানো হয়েছে।
চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত ডা. সুবল দেবনাথ বলেন, ‘হাসপাতালে আনার পর দুজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’