<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের শ্যামপুর চিনিকল একসময় দেশের অন্যতম সফল চিনিকল ছিল। ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই চিনিকলটি শুরুর পর থেকেই এলাকার কৃষক, শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সাধারণ মানুষের জীবনে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছিল। আখ চাষের জন্য এই অঞ্চলে সৃষ্টি হয়েছিল ব্যাপক সমৃদ্ধি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্যামপুর চিনিকল চালুর খবরে ওই এলাকার শ্রমিক ও মানুষের মাঝে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। তবে এখন চালু হওয়ায় অপেক্ষায়। শ্রমিকসহ স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর আচমকা মিলটি বন্ধ ঘোষণা করা হলে পুরো এলাকা থমকে যায়। ভূতুড়ে এক জনপদে পরিণত হয় মিল চত্বর। চিনিকল এলাকা অন্ধকারে ঢেকে যায়। শ্রমিকরা কাজ হারান। বিপাকে পড়েন শত শত কর্মচারী ও আখ চাষি। অবশেষে চার বছর পর সেই জট খুলল। চলতি মাসের ১৭ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নতুন সিদ্ধান্তে শ্যামপুর চিনিকল পুনরায় চালু করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ঘোষণায় আশার আলো দেখছেন কর্মরত কর্মচারী, আখ চাষি, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত ১৫ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আফরোজা বেগম পারুলের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি)-এর অধীন মাড়াই স্থগিতকৃত চিনিকলগুলো পুনরায় মাড়াই কার্যক্রম চালু করা হবে। ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন দেশের শ্যামপুর, সেতাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া, পাবনা, পঞ্চগড় ও রংপুর চিনিকলের আখ মাড়াইয়ের কার্যক্রম স্থগিতাদেশ দেন। মাড়াই স্থগিতকৃত চিনিকলগুলো পুনরায় চালু করার জন্য এবং চিনিকল লাভজনকভাবে চালানোর নিমিত্তে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। ওই টাস্কফোর্সের সুপারিশ ও মতামতের আলোকে চলতি মাসের ৩ ডিসেম্বর পর্যাপ্ত আখপ্রাপ্তি সাপেক্ষে প্রথম পর্যায়ে শ্যামপুর ও সেতাবগঞ্জ চিনিকল, দ্বিতীয় পর্যায়ে পঞ্চগড় ও পাবনা চিনিকল, তৃতীয় পর্যায়ে কুষ্টিয়া ও রংপুর চিনিকলের মাড়াই কার্যক্রম পুনরায় চালুকরণের লকেক্ষ্য স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কিন্তু সুগার মিল চালুর ঘোষণা এলেও চাষির শঙ্কা কাটছে না। কারণ চার বছর ধরে মিলটি বন্ধ থাকায় আখ চাষিরা অন্য ফসল চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। কারণ একই জমিতে আখ চাষ করলে ১৭ মাস সময় লাগে। তত দিনে ওই জমিতে তিন থেকে চারটি ফসল চাষ করা সম্ভব।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝোপঝাড়ে ঢাকা পড়ে আছে আখ পরিবহনের ট্রাক্টরগুলো। যন্ত্রপাতি মরিচায় নষ্ট হচ্ছে। ভূতুড়ে এলাকায় পড়ে আছে গোটা মিল চত্বর। শেড ঘরের টিনের চালা ফুটো। জঙ্গলা আর ঝোপঝাড়ে জরাজীর্ণ পুরো মিল এলাকা। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আখ চাষি কল্যাণ সমিতির সভাপতি এমদাদুল হক বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হঠকারী সিদ্ধান্তে মিল বন্ধ করায় আখ চাষিরা অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকেছেন। সময়মতো চাষিদের উৎসাহ দিয়ে আখ রোপণ এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে মিল সংস্কার করা দরকার।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্যামপুর চিনিকল আখ চাষি কল্যাণ কমিটির সাবেক সাধারণ সমপাদক আলতাফ হোসেন বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১২০ দিন মিল চালানোর জন্য আখের মজুদ থাকা দরকার হয়। সে হিসেবে ছয় থেকে সাত হাজার একর জমিতে আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্যামপুর সুগার মিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মিল চালুর ঘোষণায় আমরা অনেক খুশি। এখন দ্রুত সময়ের মধ্যে আখ রোপণ, মিল সংস্কার করতে হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্যামপুর সুগার মিলস লিমিটেডের ইনচার্জ মাসুদ সাদিক জানান, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মিলটির সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>