<p>ফরিদপুর সদরের কানাইপুরে প্রতিপক্ষের নির্যাতনে জখম হয়ে ওবায়দুর খান (২৮) নামে এক যুবকের নিহত হয়েছেন।</p> <p>শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে ঢাকায় নেওয়ার পথে পদ্মা সেতু এলাকায় তিনি মারা গেছেন বলে নিহতের বড় ভাই রাজিব খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। </p> <p>এর আগে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কানাইপুর বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় তেলের পাম্পে মোটরসাইকেলের তেল কিনতে যাওয়ার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন ওবায়দুর তুলে নিয়ে পিটিয়ে, কুপিয়ে জখম করে বলে নিহতের পরিবারের স্বজনরা জানান।</p> <p>নিহত ওবায়দুর কানাইপুর ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামের বিল্লাল খানের ছেলে। তিনি কৃষিকাজের ট্রাক্টর চালক ছিলেন বলে জানা গেছে।</p> <p>পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহত ওবায়দুরের এক আত্মীয় পুলিশে চাকরি করেন। সেই সুবাধে পুলিশের সঙ্গে তার উঠাবসার সম্পর্ক রয়েছে। আর খাজা ও তার লোকজন নিয়ে কানাইপুর এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজি করে বেড়ায়। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চান না। খাজাকে গ্রেপ্তার করতে ওবায়দুর পুলিশকে কয়েকবার সাহায্য করেছিল। খাজা তাকে (ওবায়দুরকে) প্রতিপক্ষ মনে করত। খাজা তাকে নিজের বশে নিতে পারছিলেন না। এই কারণেই খাজা ওবায়দুরের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে। তবে খাজার বিরুদ্ধে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। </p> <p>নিহত ওবায়দুরের ভাই রাজিব খান বলেন, বিকেল ৪টার দিকে কানাইপুর পল্লী বিদুৎ অফিসের সামনে মমতাজ ফিলিং স্টেশনে ওবায়দুর মোটরসাইকেলে তেল নিতে যায়। ওই সময় খাজা বাহিনী সেখান থেকে অটোরিকশা করে আমার ভাইকে অজ্ঞাত জায়গায় নিয়ে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে ভাইকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ঘণ্টাখানেক পর জানতে পারি ওবায়দুরকে আহত অবস্থায় ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কে বা কারা নিয়ে গেছে। আমরা দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে দেখি ভাইয়ের চোখ খুচিয়ে নষ্ট করে ফেলছে, একটি পা ভেঙে দিয়েছে। ফরিদপুর মেডিক্যাল থেকে ওবায়দুরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। </p> <p>ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মোছা. তাহিরা জানান, রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। তার মাথা হেমাটোমা, চোখে মারাত্মক আঘাতে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ ছাড়া বাম পা ভাঙাসহ শরীরে আরো ইনজুরি ছিল। এজন্য তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।</p> <p>এ ব্যাপারে খায়রুজ্জামান খাজার সঙ্গে কথা না বলতে পারলেও কথা হয় তার ভাই কানাইপুর ইউপি চেযারম্যান আলতাফ হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, তিনি শুনতে পেরেছেন কানাইপুরে ওবায়দুর নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।</p> <p>এ হত্যকাণ্ডে তার ভাই জড়িত আছে কিনা জানতে চাইলে আলতাফ হোসেন বলেন, আমি এখনো ভালো মতো ঘটনা জানতে পারিনি। তাই এ ঘটনা কে বা কারা ঘটিয়েছে তার পক্ষে বলা সম্ভব নয়।</p> <p>একটি সূত্রে জানা যায়, খায়রুজ্জামান খাজার ভাই বিএনপি নেতা, ইউপি চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আর নিহত ওবায়দুর খান ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিলায়েত হোসেনের সমর্থক ছিলেন।</p> <p>ঘটনাস্থলে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ওসি আসাদউজ্জামান বলেন, শুনেছি ওই যুবক পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতো। সেই কারণে তার ওপর হামলা হতে পারে। যুবকের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। আমরা ঘটনাস্থলে আছি। এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রীয়াধীন রয়েছে। </p>