মাশরুম চাষে হাসিবের ভাগ্য বদল, বছরে আয় ৮ লাখ টাকা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
মাশরুম চাষে হাসিবের ভাগ্য বদল, বছরে আয় ৮ লাখ টাকা
ছবি: কালের কণ্ঠ

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার তিনগাঁও এলাকার বাসিন্দা মো. হাসিব (২৬)। পূর্বে ড্রাইভিং পেশায় থাকলেও ব্যবসা করার মনমানসিকতা থেকে শুরু করেন মাশরুম চাষ। 

তবে শুরুতেই এই পথ এতো মসৃণ ছিল না তার। ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হতে প্রথমে শুরু করেন কোয়েল পাখি, হাঁস ও কবুতরের খামার।

পরে শুরু করেন শাকসবজি চাষাবাদ। তবে কোনোটিতেই সফল হননি তিনি। 

সবশেষ ২০২০ সালের শুরুর দিকে এক বন্ধুর পরামর্শে শুরু করেন মাশরুম চাষ। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

তার কঠোর পরিশ্রম ও প্রবল আত্মবিশ্বাস থেকে বছরখানেকের মধ্যে লাভের মুখ দেখেন তিনি। 

বর্তমানে বড় পরিসরে করছেন মাশরুমের চাষাবাদ। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম বিক্রি করছেন। এতে তার বাৎসরিক ৭-৮ লাখ টাকা আয় হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসিবের নিজস্ব জায়গা জমি নেই। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে দুই কক্ষের একটি টিনশেড ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন। এক কক্ষে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বসবাস করেন, অন্যটিকে বানিয়েছেন মাশরুম চাষের ল্যাবরেটরি কক্ষ। এখানেই তিনি মাশরুমের স্পন (বীজ) উৎপাদন করেন। আর দুটি কক্ষ ব্যবহার করা হয় মাশরুম উৎপাদনের জন্য।

মো. হাসিব বলেন, ২০২০ সালের দিকে মাশরুম চাষ শুরু করি। অনেক আগে থেকেই আমার টার্গেট ছিল কোনো ব্যবসা করার। তখন চিন্তা করলাম মাশরুম নিয়ে কিছু করা যায় কিনা। তখন আমার এক বন্ধু পরামর্শ দেয় মাশরুম চাষ করার জন্য। পরে সাভারের মাশরুম উন্নয়ন ইন্সটিটিউট থেকে মাশরুমের স্পন কিনে আনি। যখন মাশরুম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারি, তখন বুঝতে পারলাম আমাদের জন্য মাশরুম খুবই উপকারী। 

আমার মতে, আগামীতে মাশরুম চাষ করে অনেকেই বেকারত্ব দূর করবে। এর আগে আমি ড্রাইভিং পেশায় ছিলাম। মূলত ড্রাইভার পেশাটা আমার কাছে ভালো লাগতো না। আমি সবসময় মনে করতাম এটা আসলে জীবন না। আমার সন্তানরা ড্রাইভারের সন্তান হিসেবে বড় হবে তখন চিন্তা করলাম তারা ব্যবসায়ীর সন্তান হিসেবে বড় হোক। মাশরুম চাষ করে আমার যে অর্থ খরচ হয় তার চেয়ে দ্বিগুণ উপার্জন করা সম্ভব হয়। 

তিনি বলেন, আমার ফার্মটিতে প্রতি মাসে ২০০-২৫০ কেজি মাশরুম উৎপাদন হয়। আর এসব মাশরুম পাইকারিতে ২০০-২৫০ টাকা এবং খুচরাতে ৩০০-৪০০ টাকায় বিক্রি করে থাকি। তবে মৌসুমভেদে দাম কমবেশি হয়ে থাকে। শীতকালে মাশরুম উৎপাদন বেশি হয়ে থাকায় তখন তুলনামূলক কমে মাশরুম বিক্রি করা হয়। মাশরুম চাষ করে আমার বাৎসরিক আয় প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা। আর বাৎসরিক খরচ সর্বোচ্চ আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা খরচ হয়ে থাকে। 

হাসিব আরো বলেন, প্রতিনিয়ত মাশরুমের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আমার মাশরুম বিক্রি করতেও হিমশিম খেতে হয়। শুরুতে আশপাশের এলাকার বাড়ি ঘরে মাশরুম বিক্রি করলেও এখন দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আমার এখান থেকে মাশরুম কিনে নিয়ে যায়। এ ব্যবসা শুরু করার পূর্বে অনেকেই আমার ব্যাবসায়িক পার্টনার হতে চেয়েছিল কিন্তু আমি কাউকে গ্রহণ করিনি। কারণ, আমি তখন সন্দিহান ছিলাম মাশরুমে চাষ করে লাভবান হতে পারবো কিনা। মাশরুম চাষের আগে কোয়েল পাখি, হাঁস, কবুতরের খামার, শাকসবজি চাষাবাদ এগুলো দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলাম। কিন্তু কোনোটিতেই সফল হইনি। তখন আমার কয়েকজন ব্যবসায়িক পার্টনার ছিল। তাই মাশরুম চাষ একাই শুরু করি।

পরিবার থেকে সমর্থন পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, পরিবার থেকে সমর্থন না পেলে মাশরুম চাষাবাদ করে এতদূর আসা হতো না। আমার স্ত্রী ও সন্তানরা আমাকে কাজে খুবই সাহায্য করে থাকে।

মাশরুম নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে হাসিব বলেন, আগামীতে আরও বড় পরিসরে মাশরুম চাষ করবো। বিভিন্ন জাতের মাশরুম নিয়ে কাজ করবো। মাশরুমকে ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল অবস্থায় নিয়ে যেতে চাই। আমার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকার এগিয়ে আসবে সেই প্রত্যাশাই করি।

হাসিবের স্ত্রী সাদিয়া আক্তার বলেন, মাশরুম চাষ আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আমার স্বামীর কাছ থেকে মাশরুম চাষ করা শিখেছি। আমি তাকে সহযোগিতা করি। প্রথমে স্পন কিনে নিয়ে এসে মাশরুম চাষ করি। এখন নিজেরাই স্পন উৎপাদন করে মাশরুম উৎপাদন করছি। এই মাশরুম আমরা নিজেরাও খাবার তালিকায় রেখেছি। অন্যকেও খাবার তালিকায় রাখতে উৎসাহিত করছি। এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো।

এ বিষয়ে বন্দর উপজেলা কৃষি অফিসার তাসলিমা আক্তার বলেন, সাভারের মাশরুম উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে প্রকল্পের অধীনে একটি প্রশিক্ষণ হয়ে থাকে। হাসিব সাহেবকে ওইখানে ১৫ দিনের আবাসিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাকে এ পর্যন্ত ২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। 

তিনি বলেন, মাশরুম উৎপাদনের জন্য আমরা দুটি ঘর তৈরি করে দিয়েছি। এছাড়া একজন মাশরুম উদ্যোক্তার যা যা প্রয়োজন তাকে তা দেওয়া হয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় আগামীতেও মাশরুম চাষি হাসিবকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

নড়াইলে ২ পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১

নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইল প্রতিনিধি
শেয়ার
নড়াইলে ২ পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১
প্রতীকী ছবি

নড়াইলের কালিয়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় হাসিম মোল্যা (৩৮) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। শনিবার (১৫ মার্চ) হামিদপুর ইউনিয়নের সিলিমপুর গ্রামে এ ঘটে।

এই ঘটনার জেরে ওয়ান সুটারগান ও গুলিসহ সিরাজ মোল্যা (৪৪) ও আজিজার (৫৫) নামের দুই ব্যক্তিকে আটক করেন সেনাবাহিনী সদস্যরা। তারা মৃত আহমেদ মোল্যা ও মকবুল শেখের ছেলে।

হাসিম হামিদপুর ইউনিয়নের সিলিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। কালিয়া থানার পুলিশ সদস্য চন্দন সাহা ও সজল এবং সিলিমপুর গ্রামের কাদের মোল্যা তার দুই ছেলে জনি মোল্যা ও হাসিম মোল্যা, তোতা মোল্যার ছেলে বনি মোল্যাসহ মোট ১০ জন আহত হন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, হামিদপুর ইউনিয়নের সিলিমপুর গ্রামে ঠান্ডু মোল্যা ও জনি মোল্যা গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছে। শনিবার সকালে ঠান্ডু মোল্যা গ্রুপের লোকজন জনি মোল্যা গ্রুপের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।

এতে হাসিম মোল্যাসহ ১০ জন আহত হন। খুলনা মেডিক্যালে নেওয়ার পর হাসিম মারা যান।

কালিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশিদুল ইসলাম জানান, সিলিমপুর গ্রামে হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। সেখানে হামলা ঠেকাতে গিয়ে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য
জবি ছাত্রী অবন্তিকার আত্মহত্যা

এক বছরেও চার্জশিট জমা দিতে পারেনি পুলিশ, আসামিরা জামিনে

কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি
কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি
শেয়ার
এক বছরেও চার্জশিট জমা দিতে পারেনি পুলিশ, আসামিরা জামিনে
জবি ছাত্রী অবন্তিকা ও তার মা তাহমিনা শবনম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার এক বছর আজ। গত বছরের ১৫ মার্চ কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকার বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন অবন্তিকা। এর আগে তিনি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যার কথা সবাইকে জানান। এই ঘটনার এক বছর পার হলেও তার মায়ের করা আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলার প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি পুলিশ।

এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন অবন্তিকার মা ও তার পরিবার। এছাড়াও তদন্ত রির্পোট গোপন রাখায় ন্যায় বিচার নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম। 

এ ঘটনার পর পর আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও অবন্তিকার সহপাঠী রায়হান আম্মান সিদ্দিককে গ্রেপ্তার করা হলেও তারা বর্তমানে জামিনে মুক্ত রয়েছেন।  

মামলার অভিযোগ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জবির বেশ কিছু শিক্ষার্থী অবন্তিকাকে মানসিক নির্যাতন করেন।

এ ঘটনায় অবন্তিকা জবি শিক্ষকদের সহযোগিতা চেয়েও না পেয়ে ছুটিতে গিয়ে গত বছরের ১৫ মার্চ কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকার বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।

আরো পড়ুন
ইউক্রেনকে হারিয়ে ফ্লোরবলে সোনা জিতল বাংলাদেশ

ইউক্রেনকে হারিয়ে ফ্লোরবলে সোনা জিতল বাংলাদেশ

 

ঘটনার রাত থেকে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন জবিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত বছরের ১৮ মার্চ আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও অবন্তিকার সহপাঠী রায়হান আম্মান সিদ্দিককে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

দেশব্যাপী আলোচিত এ ঘটনার  দুইদিন পর জবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তবে জড়িতদের বিরুদ্ধে জবি প্রশাসনও কোনো কোন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি তাদের তদন্ত  রিপোর্টে কি এসেছে তাও জানানো হয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম। এরই মধ্যে তদন্ত সংশ্লিষ্ট জবি প্রশাসন জানিয়েছেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ ও সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

’ 

অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম বেগম বলেন, সহপাঠীর প্রেম প্রত্যাখ্যান করায় তার মেয়েকে দেড় বছরের অধিক সময় ধরে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করত তার কিছু সহপাঠি। এতে শিক্ষকদের কাছে প্রতিকার চেয়েও আমার মেয়ে সাহায্য পায়নি। কারণ শিক্ষক-প্রক্টর সবাই ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে একই গ্রুপের লোক হওয়ায় এতদিন তদন্ত এগোয়নি। কিন্তু পুলিশ এক বছরেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি। আমার সঙ্গে যোগাযোগও করেনি।

আরো পড়ুন
প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে আটক সেই নেতাকে বহিষ্কার করল শিবির

প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে আটক সেই নেতাকে বহিষ্কার করল শিবির

 

তাহমিনা শবনম আরও বলেন, মৃত্যুর আগে অবন্তিকা ফেসবুক পোস্টে স্পষ্ট করেই বলে গেছে ‘আমি যদি কখনো সুইসাইড করি তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী আর তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। সুনির্দিষ্ট করে বলে গেলেও এখনও কেন মামলার চার্জশিট দিতে গড়িমশি করছে?

জবি সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনায় জবি প্রশাসন পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন। প্রতিবেদনের বিষয়ে মোবাইল ফোনে অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বলেন, আত্মহত্যার ঘটনা তদন্তে ৪৫ জনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গত বছরের ১৩ জুন প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাখিল করা হয়েছে। প্রতিবেদনে কী আছে, এ নিয়ে কোনো তথ্য জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি। 

এদিকে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে কী আছে, তা আজও জানতে পারেনি অবন্তিকার পরিবার। জবির তদন্ত প্রতিবেদন ‘গোপন’ রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম।

আরো পড়ুন
‘বাঁচতে চাইলে এক লাখ টাকা বিকাশ করো’

‘বাঁচতে চাইলে এক লাখ টাকা বিকাশ করো’

 

তিনি বলেন, ২০২৩ সালে অবন্তিকার বাবা মারা যান। আমার ছেলেও ছোট। মেয়ের বিচারের জন্য এখন একাই লড়াই করতে হচ্ছে আমাকে। মেয়েকে অনেক স্বপ্ন নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য জবিতে ভর্তি করেছিলাম। কিন্তু সেখানকার কিছু শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মানসিক নির্যাতনে মেয়েকে অকালে জীবন দিতে হলো। এ মৃত্যুর দায় জবি প্রশাসন এড়াতে পারে না। 

তিনি আরো বলেন, ঘটনার দুই হোতাকেও তো আদালত জামিন দিয়েছে। তারা কি আদৌ শাস্তি পাবে? জড়িতদের নাম তদন্ত কমিটি ও পুলিশকে দিয়েছি। তদন্ত ও বিচারের নামে আমার সঙ্গে প্রহসন করা হচ্ছে।  

তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে জবির রেজিস্ট্রার ও পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ গিয়াস উদ্দিন বলেন, গত জানুয়ারিতে সিন্ডিকেট সভায় অবন্তিকার আত্মহত্যার বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুসারে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে আত্মহত্যার সঙ্গে কারা জড়িত এ বিষয়গুলো স্পর্শকাতর। তাই এখনই এসব বিষয় গণমাধ্যমে প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তবে যারাই জড়িত, বিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

পুলিশ জানায়, অবন্তিকার মোবাইল ফোনের গ্যালারিতে থাকা বেশ কিছু ছবি, স্কিন শট, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপের বেশ কিছু খুদে বার্তা পাওয়া গেছে, যা তদন্তে সহায়ক হয়েছে। অবন্তিকার মোবাইল ফোনটি আদালতের অনুমতি নিয়ে পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়। এর প্রতিবেদনও এসেছে। 

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক প্রতিবেদন না আসায় এতদিন আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করতে বিলম্ব হয়েছে। এখন সবকিছু আমাদের হাতে আছে। শিগগিরই প্রতিবেদন আদালতে দেওয়া হবে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

পুকুর খননকালে মিলল রাইফেলের বুলেট

হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
শেয়ার
পুকুর খননকালে মিলল রাইফেলের বুলেট
সংগৃহীত ছবি

ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় একটি পুকুর খনন করতে গিয়ে মিলেছে রাইফেলের ৬০টি বুলেট। উপজেলার গোয়াতলা ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের তালুকদার বাড়ির একটি পুকুরে এই বুলেট মিলছে। শনিবার (১৫ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল-মামুন সরকার।

এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ জানায়, ধোবাউড়ার গোয়াতলা ইউনিয়নের গবিন্দপুর এলাকায় ইকলাছ তালুকদারের বাড়িতে পুকুর খনন কাজ চলছিলো।

এ সময় পরিত্যক্ত অবস্থায় কিছু গুলি দেখতে পায় শ্রমিক রমজান আলী। পরে স্থানীয়দের জানালে এলাকায় খবর ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে ৬০ টি বুলেট উদ্ধার করে। এলাকাবাসীর ধারণা এগুলো ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ের হতে পারে।

আরো পড়ুন
পুত্রবধূর শ্লীলতাহানির অভিযোগে শ্বশুর গ্রেপ্তার

পুত্রবধূর শ্লীলতাহানির অভিযোগে শ্বশুর গ্রেপ্তার

 

হালুয়াঘাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সাগর সরকার বলেন, খবর পেয়ে ৬০ রাউন্ড বুলেট উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ধরনের বুলেট দীর্ঘদিন আগের। এলাকাবাসী ধারণা করছেন এগুলো ১৯৭১ সালের হতে পারে। তবে এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলছে।

মন্তব্য

হরিণাকুণ্ডে কৃষিজমি নষ্ট করে সড়ক নির্মাণের অভিযোগ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
শেয়ার
হরিণাকুণ্ডে কৃষিজমি নষ্ট করে সড়ক নির্মাণের অভিযোগ
ছবি : কালের কণ্ঠ

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার শাখারীদহ গ্রামে কৃষিজমি নষ্ট করে সড়ক নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে শরাফত-উত-দৌলা ঝন্টু নামের এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। 

শুধু কৃষি জমিই নয়, হতদরিদ্র অনেক মানুষের ঘরের পেছন থেকে এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কেটে বাড়িঘর ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হয়েছে। অনেক কৃষকের ধান, ভুট্টাসহ মৌসুমি ফসল নষ্ট করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের কাবিটা প্রকল্পের অধীনে কাপাশহাটিয়া ইউনিয়নের শাখারিদাহ গ্রামের আলতাফের বাড়ি থেকে খলিসাকুড়োর বিল পর্যন্ত সড়ক মাটি ভরাটের জন্য ১৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী অনুমোদিত উৎস থেকে মাটি সংগ্রহ না করে কৃষকদের জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন
ঠাকুরগাঁওয়ে ভুট্টাক্ষেতে মিলল নারীর লাশ

ঠাকুরগাঁওয়ে ভুট্টাক্ষেতে মিলল নারীর লাশ

 

ভুক্তভোগী কৃষকরা জানায়, কোদালের পরিবর্তে এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে রাতের আঁধারে তাদের চাষযোগ্য জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে। এতে আবাদি ফসল নষ্ট হচ্ছে।

কৃষক আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি না নিয়ে জমি থেকে মাটি কেটে নিচ্ছেন চেয়ারম্যান শরাফত-উত-দৌলা ঝন্টুর লোকজন।

এতে করে ফসলের চরম ক্ষতি হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে জমি চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।’

আব্দুর রহমান নামের আরেক কৃষক বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিক দিয়ে কোদালের মাধ্যমে মাটি কাটার কথা। কিন্তু চেয়ারম্যান সেটা করছেন না।

অভিযোগের বিষয়ে কাপাশহাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফত-উত-দৌলা ঝন্টু বলেন, ‘আমরা কোনো কৃষকের ক্ষতি করি নাই। প্রকল্পের স্বার্থে বিভিন্ন জায়গা থেকে মাটি সংগ্রহ করা হয়েছে। যদি কোনো কৃষকের ক্ষতি হয়ে থাকে, তাহলে আলোচনা করে সমাধান করা হবে।’

এ ব্যাপারে হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বি এম তারিক-উজ-জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি লোকমুখে শুনেছি। সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

তিনি আরো বলেন, ‘ওই প্রকল্পের বিল এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। ফলে কাবিটা প্রকল্পে অনিয়ম হলে বিল আটকে দেওয়া হবে।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ