<p>জনবল সঙ্কটে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কাগজে-কলমে ১৫০ শয্যার জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালকে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে উন্নীত করা হলেও এর জনবল কাঠামো রয়েছে ১০০ শয্যার। সেখানেও ৯ জন চিকিৎসকসহ মোট ৪৩টি পদ শূন্য আছে। ফলে প্রতিদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা রোগীরা।</p> <p>হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, জনবল সঙ্কট থাকলেও প্রতিদিন এ হাসপাতালে শুধুমাত্র বহির্বিভাগেই চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন প্রায় দেড় হাজার রোগী। আর হাসপাতালের অন্তঃবিভাগের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে প্রতিদিন সেবা নিচ্ছেন প্রায় ৫০০ রোগী।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সাবেক হুইপ সামশুলসহ পরিবারের ৬ সদস্যের ব্যাংক ও সম্পদের হিসাব চায় দুদক" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/24/1735015602-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সাবেক হুইপ সামশুলসহ পরিবারের ৬ সদস্যের ব্যাংক ও সম্পদের হিসাব চায় দুদক</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/12/24/1460766" target="_blank"> </a></div> </div> <p>হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১০০ শয্যার জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালটি ১৫০ শয্যার খাবারের অনুমোদন লাভ করে ২০০৬ সালে। আর ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর হাসপাতালটিকে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল হিসেবে অনুমতি পায়। সেই সাথে অবকাঠামোরও বর্ধন করা হয়। অর্থাৎ পুরাতন হাসপাতালের পাশেই নির্মাণ করা হয় চোখ ধাঁধানো সাত তলা ভবন। যেখানে অবকাঠামোগত কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু এর জনবল কাঠামোর কোনো পরিবর্তন নেই। ১০০ শয্যার জনবল কাঠামো দিয়েই চিকিৎসা সেবা চলছে ২৫০ শয্যার জেনারেল  হাসপাতালে। যেখানে প্রতিদিন সেবা নিতে আসছেন বহির্বিভাগ ও অন্তঃবিভাগ মিলে প্রায় দুই হাজার রোগী। ১০০ শয্যার জনবল কাঠামোতেও ৪৩টি পদ খালি রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে। যাদের মধ্যে সার্জারির সিনিয়র কনসালটেন্ট, গাইনি ও ই,এন,টির জুনিয়র কনসালটেন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ ৯টি পদে কোনো চিকিৎসক নেই। তারপরও ৮টি অপারেশন থিয়েটারের মাধ্যমে প্রতিমাসে এ হাসপাতালে বিভিন্ন জটিল রোগের অপারেশন সেবা নিচ্ছেন সহস্রাধিক রোগী।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সারবাহী জাহাজে ৭ খুন : মামা-ভাগনের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউ" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/24/1735016735-d99119ca42e35bfa7fbc7fba9ab1d88a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সারবাহী জাহাজে ৭ খুন : মামা-ভাগনের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউ</p> </div> </div> </div> <p><a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/12/24/1460768" target="_blank"> </a></p> <p><span style="font-size:1.25rem">গত নভেম্বর মাসেই এ হাসপাতালে অপারেশন সেবা নিয়েছেন ১ হাজার ৩০০ রোগী। সপ্তাহের প্রতি রবিবার ও বুধবার চোখের ফ্যাকো সার্জারির সেবা নিচ্ছেন ১৫-১৬ জন রোগী। আবার ৫ শয্যার ডায়ালায়সিস ওয়ার্ডে প্রতিদিন ৫ জন কিডনি রোগী এ সেবা পাচ্ছেন এ হাসপাতাল থেকে। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে হাসপাতালের চার তলায় ১০ শয্যার ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে। কিন্তু জনবল সঙ্কটে যা আজও আলোর মুখ দেখেনি। হাসপাতালের মুমূর্ষু রোগীদের আইসিইউ সেবা দিতে ওই ওয়ার্ডে ৬ জন অজ্ঞানবিদ এবং ১০ জন ওয়ার্ডবয়-ও আয়া প্রয়োজন। জেলার এই হাসপাতালে শুধু জয়পুরহাটবাসী নয়, এখানে সেবা নিতে জেলার আশপাশের নওগাঁ, বগুড়া, গাইবান্ধা ও দিনাজপুরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রোগীরা আসেন। ফলে হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও অন্তঃবিভাগে প্রতিদিন রোগীর চাপ বেশি থাকে।</span></p> </div> </div> <p>হাসপাতালে সেবা নিতে আসা নওগাঁর ধামুরহাট সদরের সাহারা খাতুন (৫৬) বলেন, মাথার ব্যথা ও গায়ে জ্বর নিয়ে তিনি গতকাল সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুই নম্বর মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন। ডাক্তার দেখার পর হাসপাতাল থেকেই নার্সরা ওষুধ দিয়ে গেছেন। সেবা পেতে কোনো সমস্যা হয়নি।</p> <p>আবার ভর্তি হওয়ার দীর্ঘ সময় পার হলেও ডাক্তার না আসার অভিযোগ করেন একই ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা জেলার কালাই উপজেলার উদয়পুর থেকে আসা বৃদ্ধ রোগী কদে বানুর (৭৫) মেয়ে রহিমা বেগম। তিনি বলেন, ‘শরীরের দুর্বলতা ও বমি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে বৃদ্ধ মাকে ভর্তি করেছি। কিন্তু বিকেল পর্যন্ত কোনো ডাক্তারই আসেনি। শুধু নার্সরা এসে খোঁজ নিচ্ছেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সহকারী চালাচ্ছিলেন বাস, ভটভটির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর আহত ৩" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/24/1735017349-7151184986aed9f8f418938930271d37.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সহকারী চালাচ্ছিলেন বাস, ভটভটির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর আহত ৩</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/12/24/1460770" target="_blank"> </a></div> </div> <p>হাসপাতালের এক নম্বর ওয়ার্ডে বুক জ্বালা-পোড়ার চিকিৎসা নিতে কালাই উপজেলার বামনগ্রামের বৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাক (৭০) গত চার দিন থেকে ভর্তি আছেন হাসপাতালে। ডাক্তার দেখলেও শ্বাসকষ্টের জন্য তাকে নেবুলাইজার ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আগে হাসপাতাল থেকেই এ সেবা পাওয়া যেত। কিন্তু এখন আর দিচ্ছে না।’ </p> <p>আব্দুর রাজ্জাকের পাশের বেডেই ভর্তি আছেন রোগী ক্ষেতলালের বিনাই গ্রামের বৃদ্ধ লজিমদ্দিন (৭৫)। তিনি জানান, গত চারদিন ধরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শরীর দুর্বল, গায়ে জ্বর। এখন কিছুটা ভালো। চিকিৎসা ও ওষুধ সবই তিনি হাসপাতাল থেকে পেয়েছেন। গত রবিবার তাকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে।</p> <p>হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সরদার রাশেদ মোবারক জুয়েল জানান, হাসপাতালে রোগীর খুবই চাপ। ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকে পাঁচ শতাধিক। বহির্বিভাগেও প্রতিদিন দেড় হাজার রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। জয়পুরহাটসহ আশপাশের চারটি জেলা থেকে রোগী আসে। অথচ জনবল কাঠামো ১০০ শয্যারও কম। এই জনবল দিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন।</p> <p>তিনি বলেন, ‘অজ্ঞানবিদ ডাক্তারের অভাবে প্রায় তিন বছর থেকে মুমূর্ষু রোগীদের আইসিইউ সেবা দেওয়া যাচ্ছে না।’</p>