<p>রাজধানীর পূর্বাচলে আয়োজিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় গতকাল শুক্রবার ছিল দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। প্রথম দুই দিন দর্শনার্থী তেমন না থাকলেও গতকাল ছুটির দিনে কুয়াশা, শীত ও যানজট উপেক্ষা মেলায় প্রচুর দর্শনার্থী আসে। এবারের বাণিজ্যমেলা সাজানো হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই ও আগস্টের পটভূমিতে। মেলার আয়োজনে তরুণসমাজকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্যাভিলিয়ন ও স্টলে এবার সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করছে।</p> <p>সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মেলার মূল ভবনের মাঝে রয়েছে তারুণ্যের বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। সেখানে সবচেয়ে বেশি ভিড়। প্যাভিলিয়নে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে তরুণ নেতৃত্বে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের বিভিন্ন বই ও ছবি রাখা হয়েছে। আঁকা হয়েছে নানা রকম গ্রাফিতি। এখানে মূল প্রতিপাদ্য—‘যুব জনশক্তি আনবে নতুন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি’।</p> <p>লেখা রয়েছে ‘এ দেশের বুকে আঠারো আসুক নেমে’, ‘অরুণ প্রাতের তরুণ দল’—এমন আরো নানা উক্তি। এ ছাড়া এবার রাখা হয়েছে ২৪ ও ৩৫ চত্বর নামের দুটি চত্বর। প্যাভিলিয়নে তরুণ-তরুণীর ভিড় বেশি। এবারের মেলায় মোট ৩৬১টি স্টল রয়েছে। দর্শনার্থীদের যাতায়াতের জন্য ২০০টি বিআরটিসি শাটল বাস রাখা হয়েছে। </p> <p>ঢাকার বাসাবো থেকে আসা আনিসুর রহমান বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পতন হয়েছে। মেলায় এসে দেখলাম, এবার মূল পটভূমিতে তরুণ প্রজন্মকে উত্সাহিত করা হয়েছে। নগরপাড়া থেকে আসা জিসান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে মেলায় ঘুরতে এসেছি। তরুণরা চাইলে যে দেশে অনেক পরিবর্তন সম্ভব, এরই প্রমাণ তারুণ্যের বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন।’ বাণিজ্যমেলার পরিচালক বিবেক সরকার বলেন, ‘তরুণসমাজকে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে, তাদের এগিয়ে নিতে তারুণ্যের বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করা হয়েছে। তরুণরা আমাদের অহংকার। তারাই পারে একটি দেশকে এগিয়ে নিতে।’ বাণিজ্যমেলায় স্কুল-কলেজের প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী বেশির ভাগ বড় স্টলে বিক্রয়কর্মীর কাজ করছে। এখানে মাসব্যাপী কর্মসংস্থান হয়েছে তাদের। আয়ের পাশাপাশি হাতে-কলমে শেখার অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে কাজে লাগাতে চায় এসব শিক্ষার্থী। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত মেলায় দর্শনার্থীদের বেশ ভিড় ছিল। শৈত্যপ্রবাহ ও যানজট তাদের মেলায় আসার প্রবল ইচ্ছাকে দমাতে পারেনি। গতবারের চেয়ে এবার বেড়েছে স্টলের সংখ্যা। প্রায় প্রতিটি স্টলে বেচাকেনা জমে উঠেছে। এসব স্টলের বেশির ভাগ বিক্রয়কর্মী ঢাকা এবং আশপাশের এলাকা থেকে এসেছেন। মেলায় দর্শনার্থীদের সহযোগিতায় রয়েছেন শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী। সেভয় আইসক্রিমের বিক্রয়কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জহির আহমেদ বলেন, ‘আমি কমার্সে পড়াশোনা করছি। এখানে এসে হাতে-কলমে ব্যবসা শেখার অভিজ্ঞতা হচ্ছে।’ পারভেজ নামের আরেক বিক্রয়কর্মী বলেন, ‘আমার বাসা মোহাম্মদপুর এলাকায়। আমি ওখানকার একটি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সামনে পড়াশোনা শেষ করে ব্যবসা করার ইচ্ছা আছে। তাই নিজেকে ঝালিয়ে নিচ্ছি।’</p> <p> </p> <p> </p>