<div style="background:#eeeeee; border:1px solid #cccccc; padding:5px 10px"><span style="color:#e74c3c"><em>মেলা পর্যবেক্ষণের জন্য ২৩৪টি সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি থাকছে পাঁচটি ওয়াচ টাওয়ার। সতর্ক অবস্থায় থাকবে একাধিক পুলিশের টিম</em></span></div> <p>পূর্বাচলের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার চতুর্থ দিন চললেও ক্রেতা নেই মেলায়। দেখা গেছে, মেলায় আগত দর্শনার্থীরা কেনাকাটার তুলনায় ফটো সেশনেই ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে যাতায়াতের জন্য বিগত সময়ের চেয়ে এবার বিআরটিসির বাস সার্ভিস নিয়ে কোনো ভোগান্তি দেখা যায়নি। বাস সার্ভিসে এবার সন্তুষ্ট যাত্রীরা। এদিকে মেলায় নিয়ম-কানুন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে মেলা কর্তৃপক্ষ।</p> <p>সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বিগত সময়ে মেলার পূর্ব পাশের চত্বরে ছিল বিআরটিসি বাস সার্ভিসের টিকিট বুথ। এবার মেলার পশ্চিম পাশে খোলা জায়গায় বিআরটিসি বাস সার্ভিসের টিকিট বুথ করায় যাত্রীদের ভোগান্তি কমে গেছে। টিকিট নিতেও কোনো হয়রানির শিকার হতে হয় না। কথা হয় ঢাকার নিকুঞ্জ থেকে আসা নার্গিস মাহমুদের সঙ্গে।</p> <p>তিনি বলেন, ‘গত তিন বছর ধরেই বাণিজ্যমেলায় আসতেছি। বিগত সময়গুলোতে বিআরটিসি বাস সার্ভিস খুব খারাপ ছিল। ধাক্কাধাক্কি করে বাসে উঠতে হতো। তবে এবার খুব সুন্দর সিস্টেম করেছে।’ সাঁতারকুল থেকে আসা তানভীর হোসেন বলেন, বিগত সময়ের চেয়ে এবার বাস সার্ভিস অনেক ভালো হয়েছে। কুড়িল থেকে মেলায় আসতে কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি।</p> <p>এদিকে মেলার চতুর্থ দিন চললেও মেলায় আগত দর্শনার্থীদের মধ্যে ক্রেতার সংখ্যা কম। বেশির ভাগই আসছেন ঘুরতে ও ফটো সেশন করতে। মেলার ফোয়ারার সামনে কথা হয় মিঠু-রুনা দম্পতির সঙ্গে। তাঁরা বলেন, ‘শুনেছি মেলা এবার বর্ণিল সাজে সেজেছে। তাই আসলাম ফটো সেশন করতে।’ মেলায় ঘুরতে এসেছেন তিন বন্ধু শুভ, সাদেক ও অসীম। তাঁরাও ছবি তোলায় ব্যস্ত।</p> <p>জানা গেছে, গত বছর মেলার উদ্বোধনের দিন তিন হাজার ক্রেতা-দর্শনার্থী টিকিট নিয়ে মেলায় প্রবেশ করেন। এবার মেলার উদ্বোধনের দিন ১১ হাজার ৭৪৩ জন দর্শনার্থী টিকিটে মেলায় প্রবেশ করেছেন। তাতে গত বছরের তুলনায় এবার ব্যবসা সফল মেলা হবে বলে ব্যবসায়ীরা মনে করছেন। তবে এখন ঘুরে ঘুরে পণ্য দেখলেও খুব শিগগিরই পুরোদমে বেচাকেনা শুরু হবে বলে মনে করেন তাঁরা। পারিপার্শ্বিক অবস্থা অনুকূলে থাকায় এবার বেশি লাভের আশা ব্যবসায়ীদের। </p> <p>মেলায় প্রবেশের টিকিট ইজারাদারের ডিজি ইনফোটেক লিমিটেডের (হেড অব অপারেশন) এস এম আমিনুল ইসলাম বলেন, শীত আর ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে গত শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত টিকিট কেটে ২৭ হাজার ৩৭২ জন এবং শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২২ হাজার ১৩৪ জন দর্শনার্থী মেলায় প্রবেশ করেছেন। এবার যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।</p> <p>সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মেলার কিছু স্টল এখনো নির্মীয়মাণ। হাতুড়ির টুং-টাং আওয়াজ বিদ্যমান। কারিগরদের কথা বলার সুযোগ নেই। কেউ কাঠ ও বোর্ড সাজাচ্ছেন। কেউ কাঠে তারকাটা মারছেন। কেউবা স্টল নির্মাণে বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রীর মাপ নিচ্ছেন। মেলা প্রাঙ্গণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। এমন সুন্দর পরিবেশে দর্শনার্থীদের কেউ ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও লাইভে এসে স্বজনদের দেখাচ্ছেন। মনোমুগ্ধকর এই পরিবেশের স্থায়িত্ব চান ক্রেতা, বিক্রেতা ও দর্শনার্থীরা। মেলার সীমানা ঘেঁষে অবস্থিত ঢাকা বাইপাস সড়ক ধুলাবালুতে পরিপূর্ণ। গাড়ি চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে।</p> <p>মেলা প্রাণবন্ত ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মেলার আয়োজক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মেলায় যেকোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে সাত শতাধিক পুলিশ সদস্য। থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের একাধিক দল। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর পাশাপাশি গেট ইজারাদারের পক্ষ থেকে থাকছে স্বেচ্ছাবেক দল। মেলায় আসা শিশুদের জন্য থাকছে শিশু পার্ক। মেলা পর্যবেক্ষণের জন্য ২৩৪টি সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি থাকছে পাঁচটি ওয়াচ টাওয়ার। সতর্ক অবস্থায় থাকবে একাধিক পুলিশের টিম। রাজধানীসহ নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী জেলার লোকজন যেন নির্বিঘ্নে মেলায় আসতে পারেন সেজন্য অন্যান্য বছরের মতো থাকছে বিআরটিসি বাস সার্ভিস।</p> <p>মিস্টার নুডলসের সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর তেমন সুবিধা করতে পারিনি। এ বছর  যেহেতু দেশ নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে, তাই এবার ভালো কিছু আশা করছি।’ নাভানা ফার্নিচারের বিক্রয় প্রতিনিধি আরিফুল আলম বলেন, ‘এবার ভালো বেচাকেনা আশা করছি। এখন দর্শনার্থী আসছে ঠিকই, কিন্তু তাঁরা ফটো সেশনে ব্যস্ত। ভারত থেকে আসা শীতের কাপড় বিক্রির স্টলের কর্মচারী দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ‘স্টল ও প্যাভিলিয়নের কর্মচারীদের থাকা-খাওয়ার সমস্যা। কম দামে খাবারের ব্যবস্থা করতে পারলে ভালো হতো। বাড়তি দাম এড়াতে কেউ কেউ বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে খাচ্ছেন। তবে এবার ভালো ব্যবসা আশা করছি।’</p> <p>রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব বিবেক সরকার বলেন, মেলা এলাকায় ধুলাবালির সমস্যা সমাধানে প্রতিনিয়ত পানি দেওয়া হচ্ছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা নিয়মিত কাজ করছেন। মেলার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পরিবেশ অনুকূলে থাকায় কেনাবেচার ধুম পড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।</p> <p> </p>