<p>বগুড়ার ধুনট উপজেলায় অবাধে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। নিচু জায়গা ভরাট, ইটভাটায় ইট তৈরিসহ নানা কাজের জন্য ওই মাটি ব্যবসায়ীরা জমির মালিকদের কাছ থেকে কিনছেন। এতে ভবিষ্যতে মাটির উর্বরতা শক্তি কমে গিয়ে ফসল উৎপাদনে ধস নামবে বলে আশঙ্কা করছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা। অথচ প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ মাটি কাটা বন্ধে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।</p> <p>উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট ২৩ হাজার ১৪৫ হেক্টর তিন ফসলি আবাদি জমি রয়েছে। এসব তিন ফসলি জমিতে ধান, পাট, গম, ভুট্টা, আলু, সরিষা, মরিচ, বেগুন, ছোলাসহ বিভিন্ন জাতের কৃষিপণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে। কয়েক বছর ধরে সরকারি নিয়ম অমান্য করে এসব আবাদি জমির উপরিভাগের মাটি এক শ্রেণির মাটি ব্যবসায়ী কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। ফসল উৎপাদনের জন্য শতকরা ৫ শতাংশ যে জৈব উপাদান দরকার, তা সাধারণত মাটির ওপর থেকে আট ইঞ্চি গভীর পর্যন্ত থাকে। কিন্তু ইটভাটার মালিকরা মাটির উপরিভাগের এক থেকে দেড় ফুট পর্যন্ত কেটে নিচ্ছেন। এতে কেঁচোসহ উপকারী পোকামাকড় নষ্ট হচ্ছে।</p> <p>উপজেলার মরিচতলা, ভাণ্ডারবাড়ি, মানিকপোটল, বালুয়াটা, বড়বিলা, খাদুলী, রুদ্রবাড়িয়া, শ্যামগাঁতী, গোপালনগর, পাচথুপিসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ধানিজমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে ইটভাটায় মজুদ করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, বর্ষা মৌসুমে বন্ধ থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে ধানিজমির মাটি কাটা হচ্ছে। এলাকার কৃষকরা জমির উর্বরতা শক্তির ক্ষতির দিক চিন্তা না করে সাময়িক লাভের আশায় মাটি বিক্রি করছেন।</p> <p>এ বিষয়ে উপজেলার মরিচতলা গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী আল-আমিন বলেন, ‘আমাদের দোষ কী। কারো ফসলি জমির মাটি তো জোর করে কাটছি না। কৃষকরা মাটি বেচে বলেই তো নগদ টাকায় ন্যায্য দাম দিয়ে মাটি কিনে বিক্রি করি।’</p> <p>উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ছামিদুল ইসলাম বলেন, ‘কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি কেটে নেওয়ায় পুষ্টি উপাদান কমে গিয়ে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে জমির উপরিভাগের মাটি বিক্রি না করার জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’</p> <p>ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খৃষ্টফার হিমেল রিছিল বলেন, ‘এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’</p>