<p style="text-align:justify">বোয়ালখালী উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়ন কাউন্সিল উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে নাইমা সুলতানা মাহিয়া। বাড়ির সামনে ছোট্ট একটি চায়ের দোকানে কাজ করেন তার বাবা মোরশেদ আলম। মাহিয়ারা তিন বোন। পরিবারের সব দায়িত্ব বাবার কাঁধেই।</p> <p style="text-align:justify">চায়ের দোকানে তেমন আয় না থাকায় তিন বোনের লেখাপড়া ও পরিবারের খরচ বহন করা বাবার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তাদের লেখাপড়া প্রায় বন্ধের পথে। মাহিয়ার শখ ছিল সেলাইয়ের কাজ শিখে পরিবারের হাল ধরবে, কিন্তু অর্থের অভাবে সেলাই প্রশিক্ষণ নিতে পারছিল না। প্রশিক্ষণ নিলেও একটি মেশিনের অভাবে সব ভেস্তে যাবে।</p> <p style="text-align:justify">সেই চিন্তায় প্রশিক্ষণও নেওয়া হচ্ছিল না। মাহিয়ার সেই স্বপ্ন ও শখ পূরণে এগিয়ে এলো বসুন্ধরা শুভসংঘ। বিনা মূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে হাতে পেল স্বপ্নের সেলাই মেশিন। এই মেশিন দিয়ে বাকি দুই বোনকে সে প্রশিক্ষণ দেবে।</p> <p style="text-align:justify">এরপর তিন বোন মিলে উদ্যোক্তা হয়ে পরিবারের হাল ধরবে। চোখের পানি মুছতে মুছতে সেলাই মেশিনে হাত রেখে এমনই সব কথা বলছিল মাহিয়া। এক পর্যায়ে মাহিয়া বলে, ‘এই চোখের পানি বেদনার নয়, আনন্দের। বসুন্ধরা শুভসংঘ আমার স্বপ্ন পূরণ করতে এগিয়ে এসেছে। বসুন্ধরা গ্রুপকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’ শুধু মাহিয়া নয়, সেদিন বোয়ালখালীর ২০ নারীর চোখের জলে আনন্দের কাব্য রচনা করেছে দেশসেরা শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ।</p> <p style="text-align:justify">স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ (সম্মান) দ্বিতীয় বর্ষে পড়েন নুসরাত জাহান। বাবা দারোয়ানের চাকরি করেন। পরিবারে ভাই নেই। দুই বোনের পড়ালেখা এগিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছেন বাবা। স্বপ্ন ছিল ভালো কিছু করবেন নুসরাত। অর্থের অভাবে নুসরাত জাহানের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাচ্ছিল বোধ হয়। এমন এক সময়ে বসুন্ধরা শুভসংঘ তার পাশে দাঁড়িয়েছে, কল্পনাও করতে পারেননি তিনি। বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে বিনা মূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন পেয়ে যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছেন নুসরাত। তিনি বলেন, ‘ভেবেছিলাম, স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। এখন থেকে সেলাই কাজের টাকা আমি পড়ালেখায় খরচ করতে পারব। পড়ালেখা চালিয়ে যেতে আর কোনো অসুবিধা নেই। এসব মানবিক কাজে দোয়া এমনিতেই মন থেকে চলে আসে। আমি অন্তর থেকে দোয়া করি, বসুন্ধরা গ্রুপ যেন আজীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারে।’</p> <p style="text-align:justify">সানজিদা খানম সায়মা সেলাইয়ের পাশাপাশি ব্লক, বাটিকের কাজও শিখেছেন। তার হাতে ব্লক, বাটিক ও সেলাইয়ের কাজ মুহূর্তে মুগ্ধ করে সবাইকে। সানজিদা বলেন, ‘টাকার অভাবে পড়ালেখা বন্ধ করতে হয়েছিল। স্বপ্ন ছিল আবারও পড়ালেখা শুরু করব। মনের সেই কল্পনা সৃষ্টিকর্তা পৌঁছে দিয়েছেন বসুন্ধরা শুভসংঘের কাছে। বসুন্ধরা গ্রুপের দেওয়া সেলাই মেশিনের চাকা ঘুরিয়ে পড়ালেখার খরচ জোগাতে পারব, সেটা ভাবতেই কেমন যেন এক অনুভূতি কাজ করছে। নিজের টাকায় পড়ালেখার আনন্দই আলাদা। বসুন্ধরা শুভসংঘকে শুধু ধন্যবাদ দিলে অনেক কম হবে। আমি ঋণী হয়ে গেলাম তাদের কাছে।’</p>