<p>মায়ানমার এখন বৈশ্বিক অপরাধের রাজধানীতে পরিণত হয়েছে। যুদ্ধকবলিত দেশটিতে প্রকাশ্যে চলছে আফিম বেচাকেনা, বনাঞ্চলে মাদকের ল্যাব থেকে শুরু করে মানবপাচার। এমনকি দেশটিতে অনলাইন প্রতারণাও বারবার শিরোনামে এসেছে। গ্লোবাল অর্গানাইজড ক্রাইম ইনডেক্স অনুযায়ী, এসব পরিস্থিতির জন্য মায়নামার এখন বিশ্বের সংঘটিত অপরাধের মূল ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।</p> <p>নিউইয়র্ক টাইমসের অনুসন্ধান বলছে, গৃহযুদ্ধে ভেঙে পড়েছে দেশটির আইন-শৃঙ্খলা। অনিয়ম ও অপরাধের হারও বেড়েই চলেছে। আর এতে সাধারণ নাগরিক শুধু নয়, জড়িত জান্তা সেনা ও বিদ্রোহীরা।</p> <p>ওই প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, প্রায় চার বছর ধরে চলা সংঘাতে বিধ্বস্ত মায়ানমার। জান্তা ও বিদ্রোহীদের লড়াইয়ে অনুপস্থিত আইনের শাসন। এই সুযোগে দেশটি এখন বৈশ্বিক অপরাধের রাজধানীতে পরিণত হয়েছে।</p> <p>মায়ানমারে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত শান রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় হচ্ছে আফিম চাষ। স্থানীয় আফিম চাষি দাও হ্লা উইন বলেন, ‘কোনো সরকার নেই, সেনা নেই। আমাদের এখন গোপনে চাষ করতে হয় না।’</p> <p>বর্তমানে হেরোইনেরও সর্ববৃহৎ রপ্তানিকারক দেশ মায়ানমার। গত বছর বিশ্বব্যাপী রপ্তানি হয় ১২৬ কোটি ডলারের হেরোইন, দাবি জাতিসংঘের অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইমের (ইউএনওডিসি)।</p> <p>বিয়ার এক ডলারে এবং মেথামফেটামিন ও ক্যাফেইনের মিশ্রণের মাদক ইয়াবা ২৫ সেন্টে বিক্রি হচ্ছে। ইউএনওডিসি জানায়,  ২০২৩ সালে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো ১৯০ টন মেথামফেটামিন জব্দ করে। সীমান্ত পেরিয়ে মায়ানমার থেকে ইয়াবা ভারত-বাংলাদেশেও পাচার হচ্ছে। </p> <p>এ ছাড়া মায়ানমার সাইবার অপরাধ ও অনলাইনে প্রচারণার কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। প্রচারণার জন্য ইউরোপ, আমেরিকা, চীনসহ ২২ দেশের নাগরিককে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। ক্রিপ্টো কারেন্সিতে বিনিয়োগের লোভ দেখিয়ে তাদের ফাঁদে ফেলা হচ্ছে। এ ছাড়া মায়নমারে দেদার চলছে মানবপাচার। </p> <p>২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে মায়ানমারের উত্তরে কাচিন রাজ্যের পাংওয়ার আশপাশের পাইন বনে ১৫টি খনি ছিল। ওই সংখ্যা এখন পাঁচ গুণ বেড়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী চীনকে হটিয়ে ডিসপ্রোজিয়াম ও টারবিয়াম রপ্তানিতে শীর্ষ স্থান দখল করেছে মায়ানমার। এর ফলে পরিবেশগত ঝুঁকি ও শ্রমিক মৃত্যু বাড়ছে।</p> <p> </p> <p> </p>