<p>বন্যার আশঙ্কা নিয়েই সুনামগঞ্জে আবারও বোরো ধানের আবাদ শুরু করেছেন হাওরপারের কৃষকরা। ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু না হওয়ায় চিন্তিত তাঁরা। হাওর বাঁচাও আন্দোলন বলছে, গত ১৫ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজের উদ্বোধন করা হলেও এটা ছিল লোক-দেখানো। এখনো পিআইসি গঠিত হয়নি, আর কবে সব পিআইসি গঠিত হবে এবং ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হবে, তা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। আর যে কটি পিআইসি গঠন করা হয়েছে সেগুলোতেও অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ মেরামত ও নির্মাণকাজ কাবিটা (কাজের বিনিময়ে টাকা) নীতিমালা অনুযায়ী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পিআইসি গঠন, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার নিয়ম রয়েছে।</p> <p>সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ছোট-বড় পাঁচটি হাওরের ৬৪ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ হবে। ২৫টি পিআইসি গঠন করা হবে। এতে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয় হবে। হাওরপারের কৃষকরা জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু ও শেষ করতে না পারলে ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ হিসেবে তাঁরা জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের মার্চের শেষ ও এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে স্মরণকালের ভয়াবহ পাহাড়ি ঢল ও অতিমাত্রায় বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় জেলার সব হাওর পানিতে তলিয়ে শতভাগ বোরো ফসলডুবিতে হাহাকার সৃষ্টি হয়।</p> <p>সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্র জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রায় ৭০০ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৫৯৬টি। আর জেলার ১২টি উপজেলায় ১৯০টি (পিআইসি) প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এ বছর জেলায় ১২৫ কোটি টাকায় ৫৩ হাওরের ৫৩৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে ক্লোজার বা বড় ভাঙন রয়েছে ১০৫টি।</p> <p>বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুর রহমান জানান, ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতে কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাসেম বলেন, ‘পিআইসি গঠনে কঠোর নজরদারি এবং কোনো বিতর্কিত ব্যক্তির পিআইসিতে কাজ করার সুযোগ নেই। আর নীতিমালার আলোকেই আমরা সব কাজ করছি।’ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, হাওরে পানি বেশি থাকায় এবং মাটির সংকটের কারণে কাজে বিলম্ব হচ্ছে। চলতি মাসেই সব কমিটি গঠন করে কাজও শুরু হবে।</p> <p> </p>