<p>ইসরায়েলের মসজিদগুলোতে লাউড স্পিকারে আজান না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গিভির। দেশটির গণমাধ্যম চ্যানেল-১২ এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেন গিভির ইসরায়েল পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে মসজিদগুলো লাউডস্পিকারের মাধ্যমে আজান সম্প্রচার করা থেকে বিরত থাকে।</p> <p>প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন নীতিমালায় পুলিশ মসজিদে প্রবেশ করতে পারবে এবং আজান দিতে লাউডস্পিকারের সরঞ্জাম ব্যবহার করা হলে, তা বাজেয়াপ্ত করতে পারবে। এমনকি যেসব মসজিদ নির্দেশনা না মেনে স্পিকারে আজান দেবে তাদের জরিমানাও করা হবে।</p> <p>এক্স-এর একটি পোস্টে অতি-জাতীয়তাবাদী এই মন্ত্রী বলেছেন, তিনি এই নীতিটি চালু করতে পেরে ‘গর্বিত’। তিনি বলেছেন, ‘মসজিদ থেকে অযৌক্তিক শব্দের অবসান ঘটবে, এই শব্দ ইসরায়েলের বাসিন্দাদের জন্য একটি বিপদ হয়ে উঠেছে।’</p> <p>তবে এ বিষয়ে ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতারা ইতামার বেন গিভিরের এই নির্দেশনার নিন্দা জানিয়েছে। লেবার পার্টির গিলাদ কারিভ এক্সে লিখেছেন, ‘বেন গিভির ইসরায়েলের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছেন। অশান্তি সৃষ্টি না করা পর্যন্ত বেন গিভির থামবেন না। একটি ম্যাচের কাঠিই ব্যারেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। ’</p> <p>হাদেস-টা’আলের নেতা আহমেদ তিবিও এই নিষেধাজ্ঞার কঠোর নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘বেন গিভির ঘৃণা ও আরবদের নিপীড়নের ওপর তার ঘাঁটি তৈরি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাঙ্গাবাজ মন্ত্রীর কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী।’</p> <p>এদিকে আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভিরের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা করেছে ফিলিস্তিনিরা। গতকাল রবিবার এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনিদের শীর্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা ফিলিস্তিনি জাতীয় কাউন্সিল এই সিদ্ধান্তকে মসজিদের বিরুদ্ধে ‘অপরাধ’ বলে অভিহিত করে নিন্দা জানিয়েছে।</p> <p>তারা আরো জানায়, ‘পবিত্র স্থান এবং ধর্মীয় অনুশীলনের ওপর একটি নির্মম আক্রমণ এই সিদ্ধান্ত, এটি বর্ণবাদকে প্রশ্রয় দেওয়ার একটি স্পষ্ট প্রয়াস। এই কার্যক্রম জমির প্রকৃত মালিকদের বিরুদ্ধে নির্যাতন, যাদের অধিকাংশকে তাদের বাড়িঘর এবং জমি থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করে দখল করা হয়েছে এবং সরকার তাদের সঙ্গে সংখ্যালঘু হিসেবে আচরণ করার চেষ্টা করছে।’</p> <p>ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস বেন-গভিরের সিদ্ধান্তকে ‘গুরুতর অপরাধ এবং উপাসনার স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ’ বলে নিন্দা করেছে। হামাস এই অপরাধমূলক সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করতে ফিলিস্তিনিদের প্রতি আহবান জানিয়েছে।</p> <p>এ ছাড়া হামাস আরব লীগ, অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে এই অপরাধের নিন্দা করার জন্য ও জনগণের বিরুদ্ধে দখলদারিত্ব বন্ধ করতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানিয়েছে। পবিত্র স্থান ও ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে যারা অপরাধ করছে সেই নেতাদেরও জবাবদিহি করার জন্য আহবান জানিয়েছে। </p> <p>বেন গিভির জেলে বন্দিদের সংখ্যা কমানোর জন্য ফিলিস্তিনি বন্দিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পক্ষেও কথা বলেছেন। মৃত্যুদণ্ডকে এই সমস্যার একটি ‘আংশিক সমাধান’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি। বেন-গভির অধিকৃত পশ্চিম তীরের সম্পূর্ণ সংযুক্তিকরণ এবং গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বসতি পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহবানও জানিয়েছেন।</p> <p>সূত্র : টাইমস অব ইসরায়েল, মিডিল ইস্ট মনিটর।</p>